দেশের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা খাতের জাতীয় বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ‘বেসিস জাপান ডে ২০২২’। রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর লেকশোর হোটেলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেসিস ডাইরেক্টর ও বেসিস জাপান ডেস্কের চেয়ারম্যান এ কে এম আহমেদুল ইসলাম বাবু।
অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, জাইকার বাংলাদেশ প্রধান ইচিগুচি তোমোহিদে, জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইউজি আন্দো এবং মিয়াজাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ড. হিরোশি সামোশিমা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মাটি এবং মানুষের গুরুত্ব দিতে বলেছেন। বিশ্বের অন্যতম উন্নত দেশ জাপানেও আমরা দেখেছি
যে তারাও মাটি এবং মানুষকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে সক্ষম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কিছু বিশেষ কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে আমাদের দেশকে গত ১৩ বছরে উন্নতির শিখরে নিয়ে গেছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে আইসিটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরির লক্ষ্যে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সোসাইটি এই ৪টি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। জনগণের জীবনকে আরও সহজ করতে এআই, রোবোটিক, বিগ ডেটা অ্যানালিটিক ইত্যাদির ব্যবহারও শুরু করা হয়েছে।
সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশে জাপানি ফার্মগুলোর কার্যক্রম বৃদ্ধি, নতুন বাজার উন্মোচন, বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে এবং পাশাপাশি জাপানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে জাপানের সহযোগিতা বরাবরই ইতিবাচক। অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের দিক থেকে জাপান বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বন্ধুরাষ্ট্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে জাপান ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে আসছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, বাংলাদেশ জাপানের বিনিয়োগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তির দিক থেকে অনেক এগিয়েছে। তাই বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত একটি উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনাময় খাত। বাংলাদেশ সরকার দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তাই তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ ও জাপানের একসঙ্গে কাজ করার বেশ সুযোগ রয়েছে। তিনি বেসিস জাপান ডেস্কের কার্যক্রমের প্রশংসা করেন।
বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানেরর মধ্যে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক বন্ধুত্বের সেতুবন্ধনে ও গভীর সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে বেসিস সবসময়ই কাজ করে আসছে। সামগ্রিক ব্যবসায়িক পরিবেশ, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের উন্নতি এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বেসরকারি খাতকে আরও প্রগতিশীল করতে এবং বাংলাদেশের জন্য নতুন ব্যবসার সুযোগ উন্মোচন করতে বেসিস কাজ করে যাবে। অনুষ্ঠানে বেসিস এবং মিয়াজাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।