দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করতে হবে। নতুন একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করে তার মাধ্যমে ভোট প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। যেন জনগণ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।
সোমবার (৬ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম ও বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান ষড়যন্ত্রের শিকার দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমান এক সামরিক ষড়যন্ত্রের ফলে বন্দী হন। যারা তাকে গ্রেপ্তার করেছে, তারা চায়নি বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হোক। তারা ভেবেছিল তারেক জিয়াকে গ্রেপ্তার করলে বাংলাদেশ থেকে সত্যিকার রাজনীতিকে ধ্বংস করে দেওয়া যাবে। ওয়ান ইলেভেনের সময় বাংলাদেশ থেকে রাজনীতি বাদ দিয়ে একটি অপরাজনীতির ধারা সৃষ্টি করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটা ছিল দেশের স্বাধীনতাকে গ্রেপ্তার করা। তার বিরুদ্ধে নানা সময় অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তাকে খলনায়ক বানানো হয়েছে। যারা বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তারাই এসব অপপ্রচার চালিয়েছে। এরা দেশের স্বার্থবিরোধী।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও স্বাধিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা এত পরিমাণে দুর্নীতি করেছে যে, দেশের অর্থনৈতিক খাতগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। তারা ব্যাংকিং খাত লোপাট করে দিয়েছে। হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, রিজার্ভ কমে এসেছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত ধ্বংস করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের দোহাই দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, এতো পরিমাণ দুর্নীতি ও ডলার চুরি হয়েছে…যার ফলে দ্রব্যমূল্যের আজ এ অবস্থা। তারা বিভিন্ন উন্নয়নের মডেল দেখায় যে, দেশ উন্নত হয়েছে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের দেশের মানুষ খেতে পারছে না। তারা ব্যস্ত মেট্রোরেল-পাতাল রেল নিয়ে। আওয়ামী লীগ দেশকে খাদের কিনারে নিয়ে গেছে। তারা না হটলে দেশের উন্নতি হবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, তারা বলছে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে, কিন্তু কোন সংবিধান? সংবিধানকে তো কাটা-ছেঁড়া করে শেষ করে দেওয়া হয়েছে। সরকার এখন মিডিয়াগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে। বিএনপির একমাত্র মুখপাত্র দিনকাল পত্রিকা বন্ধ করেছে। কারণ তারা ভিন্নমত সহ্য করতে পারে না।
উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামের উপদেষ্টা ফজলুর আলম খোকনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহম্মেদ আজম খান।