যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে অপহৃত ১৩ বছরের এক কিশোরের লাশ চট্টগ্রাম নগরী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার হিলভিউ আবাসিক এলাকার ১০ নম্বর সড়ক থেকে তার লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত নুরুন নবী ঢাকার যাত্রাবাড়ীর ধলপুর এলাকার গোলাম রসুলের ছেলে।
পরিবারের সূত্রমতে, গত সোমবার (২১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ধলপুরে বাড়ির সামনে থেকে নুরুন নবী অপহৃত হয়। পরে তার বাবা গোলাম রসুলের মোবাইলে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) রাতে গোলাম রসুল যাত্রাবাড়ী থানায় একটি জিডি করেন। এরপর অপহরণকারীদের দেওয়া একটি বিকাশ নম্বরে মুক্তিপণের ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
নিহতের বাবা গোলাম রসুলের অভিযোগ, থানায় জিডি করার পরেও পুলিশ তার সন্তানকে উদ্ধারের ব্যাপারে কোনো সহযোগিতা করেনি। মুক্তিপণ নিয়ে অপহরণকারীদের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে কথোপকথন হয়েছিল। হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ আদান-প্রদান হয়েছিল। সেসব তথ্য পুলিশকে জানালেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি বিকাশে ৫ হাজার টাকা দেওয়ার তথ্যও পুলিশকে জানিয়েছিলেন। পুলিশ বিকাশের ওই নম্বর কোনো যাচাই-বাছাই করেনি।
এদিকে শুক্রবার সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার হিলভিউ আবাসিক এলাকার ১০ নম্বর সড়ক থেকে অজ্ঞাত কিশোরে একটি লাশটি উদ্ধার করা হয়। সড়কের পাশে একটি বন্ধ গ্যারেজের সামনে লাশটি পড়ে ছিল। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করা হয়। লাশের কয়েক গজ দূরে রক্তমাখা ছুরি পাওয়া যায়। পরে খবর পেয়ে নুরুন নবীর স্বজনরা সে কিশোরের লাশকে নুরুন নবী লাশ বলে শনাক্ত করেন।
সিএমপির পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আক্তারুজ্জামান বলেন, অপহরণকারীদের সঙ্গে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে কিশোরের পরিবারের বনিবনা না হওয়ায় তাকে চট্টগ্রামে এনে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে নিহতের ভাই চট্টগ্রাম এসে লাশ শনাক্ত করলে তার কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুল ইসলাম বলেন, অপহৃত নুরুন নবীর লাশ চট্টগ্রামে উদ্ধার হয়েছে। তবে নিখোঁজের পর জিডি হওয়ায় পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করছিল। কিন্তু এর আগেই শিশুটিকে অপহরণকারীরা হত্যা করেছে।
ধারণা করছি, অপহরণকারীরা ওই শিশুর বাড়ির আশপাশের কেউ হবে। বিষয়টি তদন্ত চলছে। এ সময় পুলিশের গাফিলতির বিষয়টি অস্বীকার করেন ওসি।