মার্কিন প্রেসিডেন্টের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক বিশেষ দূত রাশাদ হোসাইন চারদিনের সফরে ঢাকা আসছেন। প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী আগামী রোববার তিনি বাংলাদেশে পৌঁছাবেন। থাকবেন ২০শে এপ্রিল পর্যন্ত। দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্র সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সফরকালে সরকারের মন্ত্রী-সচিব, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে তার বৈঠক হবে। তবে সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা সোমবার মানবজমিনকে জানিয়েছেন, পবিত্র মাহে রমজানে অফিস শিডিউলে পরিবর্তন এবং মন্ত্রী-সচিবদের পূর্বনির্ধারিত সূচির কারণে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিশেষ দূতের সঙ্গে বৈঠকের অ্যাপয়েনমেন্ট এখনো চূড়ান্ত হয়নি। রাজধানীতে তার অন্য কর্মসূচির সঙ্গে সাক্ষাৎসূচির সমন্বয়েরও চেষ্টা চলছে। তবে সরকারি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে পররাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, আইন এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ে মার্কিন বিশেষ দূতের বৈঠকের আগ্রহ রয়েছে।
দূতাবাসের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সেসব অ্যাপয়েন্ট চূড়ান্তকরণের কাজ চলছে। বিশ্বের দেশে দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করার কাজে উৎসাহ প্রদান এবং তদারকিতে জোর রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের। স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং এ সংক্রান্ত বিশেষ দূত তদারকির কাজটি করেন। চলতি বছরের সূচনাতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক দূত হিসাবে রাশাদ হোসাইনের নিয়োগ অনুমোদন করে সিনেট। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনিই প্রথম মুসলিম যিনি গুরুত্বপূর্ণ ওই পদে আসীন। মাডারেট মুসলিম কান্ট্রি বাংলাদেশ সফর রাশাদের অগ্রাধিকারে ছিল দাবি করে এক কূটনীতিক বলেন, এখানে তিনি সিরিজ মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আগ্রহী। তার আগ্রহের প্রেক্ষিতেই রাজধানীর ইস্কাটনস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিস) মিলনায়তনে একটি বক্তৃতার আয়োজন করা হচ্ছে। যেখানে সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধিরা ছাড়াও কূটনীতিক ও মিডিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের তথ্য মতে, বৈশ্বিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ে মার্কিন নীতি প্রণয়নে প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন তার বিশেষ দূত।
বিশ্বব্যাপী ধর্মীয় স্বাধীনতার অপব্যবহার, নিপীড়ন এবং বৈষম্য নিরীক্ষণে মার্কিন প্রশাসনে বিদ্যমান ম্যাকানিজমে নেতৃত্ব দেন রাশাদ হোসাইন। উপরোল্লিখিত উদ্বেগগুলো নিরসনে গৃহীত কর্মসূচির তত্ত্বাবধান এবং বিশ্বময় ছড়িয়ে থাকা ধর্ম-বিশ্বাসের লোকজনের ন্যায়সঙ্গত এবং অর্থপূর্ণ অন্তর্ভুক্তিতে কাজ করেন তিনি। পাশাপাশি নাগরিক সমাজে বিস্তৃত পরিসরে বৈচিত্র্যময় এবং গতিশীল অংশীদারিত্ব গড়ার প্রয়াস চালান। বহু গুণের অধিকারী মিস্টার হোসাইন মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত (অ্যাম্বাসেডর এট লার্জ) হওয়ার আগে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের অংশীদারিত্ব এবং গ্লোবাল এনগেজমেন্ট ডিরেক্টরেটের পরিচালক ছিলেন। সেখানে দীর্ঘ সময় তিনি সিনিয়র কাউন্সেল হিসেবে কাজ করেছেন। তারও আগে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)-তে ওবামা প্রশাসনের প্রতিনিধিত্ব করেন হোসাইন। কৌশলগত সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ বিষয়ক মার্কিন বিশেষ দূত এবং হোয়াইট হাউসের ডেপুটি অ্যাসোসিয়েট কাউন্সিলর হিসেবেও হোসাইন দায়িত্ব পালন করেছেন।