ঢাকার মেট্রোরেলের ছয় কোচের আরেক সেট ট্রেন ঢাকায় এসেছে। এই নিয়ে দুই সেট কোচ আনা হলো রাজধানীতে। মঙ্গলবার ( ১ জুন) রাতে দুটি কোচ নিয়ে বার্জ দিয়াবাড়ীতে জেটির কাছে আসে। আবহাওয়া ঠিকঠাক থাকলে কোচগুলো বার্জ থেকে নামিয়ে উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোতে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, দ্বিতীয় মেট্রোট্রেন সেটবাহী জাহাজ গত ২১ এপ্রিল জাপানের কোবে সমুদ্র বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। ৯ মে বাংলাদেশের মোংলা সমুদ্র বন্দরে পৌঁছায়। সেখানে শুল্ক ও ভ্যাট সম্পর্কিত কাজ সম্পন্ন করে ২৪ মে বার্জে করে নদী পথে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে। এরমধ্যে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে আবহাওয়া খারাপ হলে নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ কারণে ঝালকাঠিতেই নোঙর করে রাখা হয়। এরপর ২৮ মে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে মেট্রোট্রেন সেটবাহী জাহাজ।
গত ২১ এপ্রিল মেট্রোট্রেনের প্রথম সেটটি জাপান থেকে ঢাকায় এসে পৌছায়, যা ফার্স্ট ট্র্যাক করা সরকারি প্রকল্পটির জন্য একটি বড় ধরনের মাইলফলক। ১২ মে বাংলাদেশের প্রথম বিদুৎ চালিত এই ট্রেন উত্তরা ডিপোর ভেতরেই ৫০০ মিটার এলাকায় চালিয়ে দেখা হয়। এর মাধ্যমে বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) অধীনে ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প (লাইন-৬) বাস্তবায়িত হচ্ছে। কোচগুলো জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়াম কোম্পানি লিমিটেড তৈরি করছে। বাংলাদেশে এই কোচ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
কন্ট্রাক্ট প্যাকেজ-০৮-এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবিএম আরিফুর রহমান জানান, মেট্রোরেলের লাইন-৬ কন্ট্রাক্ট প্যাকেজ-০৮-এর আওতায় ২৪টি যাত্রীবাহী রেল কোচ আমদানি করা হবে। প্রতিটি কোচে ছয়টি বগি থাকবে। এমন একটি প্যাকেজে শুল্কসহ প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। ২০২২ সালের মধ্যে ২৪টি জাহাজে মোট ১৪৪টি বগি মোংলা বন্দর থেকে খালাস হবে।
দেখতে কেমন হবে মেট্রোরেলের ট্রেন সেট
মেট্রোরেল ট্রেন সেট জাতীয় পতাকার লাল-সবুজ রঙে রঙ করা থাকবে। ট্রেন সেটের বডি এবং ভিতরের কাঠামোর সবকিছুই স্টেনলেস স্টিলে তৈরি করা হচ্ছে। কোচে ব্যবহৃত গ্লাসগুলো থাকবে বুলেটপ্রুফ। এই ট্রেনের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় এক শ কিলোমিটার।
ঢাকার যানজট নিরসনসহ নগরবাসীর যাতায়াত আরামদায়ক, দ্রুততর ও নির্বিঘ্ন করতে এই মেট্রোরেল প্রকল্পের মাধ্যমে সব কটি পয়েন্টে ২৪ সেট ট্রেন চলাচল করবে। প্রত্যেকটি ট্রেনে থাকবে ৬টি করে কার বা কামরা। একেকটি কোচে ১ হাজার ৭৩৮ জন যাত্রী যেতে পারবেন। চলাচল শুরু হলে উভয় দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহনে সক্ষমতা থাকবে মেট্রোরেলের।
যাত্রী যাতে দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে পারেন সে ব্যবস্থও থাকবে। প্রতিটি কোচের দুদিকে চারটি দরজা থাকবে। ট্রেনে সিটগুলো লম্বালম্বি পাতা থাকবে, প্রতিটি কোচে প্রতিবন্ধী কিংবা বয়ঃবৃদ্ধদের যারা বসতে পারবেন না তাদের জন্য থাকবে দুটি করে হুইলচেয়ার। প্রতিটি ট্রেনে ৬টি কোচের মধ্যে একটি কোচ শুধুমাত্র নারী যাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হবে। বাকিগুলোতে নারী পুরুষ উভয়ই একসঙ্গে যেতে পারবেন।