ভারতের উত্তরাখণ্ডে ভেঙে পড়া সুড়ঙ্গ থেকে শ্রমিকদের বের করে আনতে আবারও বাধার মুখে পড়তে হলো উদ্ধারকারীদের। বৃহস্পতিবার (২৩ নভ্ম্বের) রাতে আটকে পড়া শ্রমিকদের থেকে কয়েক মিটার দূরত্বেই ফের বন্ধ হয়ে যায় উদ্ধারকাজ। যে যন্ত্র দিয়ে সুড়ঙ্গের মাটি কাটা হচ্ছিল তাতে প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দেওয়ায় কাজ থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, যে কাঠামোর ওপর দাঁড় করিয়ে যন্ত্রটিকে চালানো হচ্ছিল তাতেও ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে ধসে পড়া সুড়ঙ্গ থেকে ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারে আরও কিছুটা সময় লাগবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) সৈয়দ আতা হাসনাইনের মতে, আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারের জন্য ড্রিলিং অপারেশন অতিরিক্ত বাধার সম্মুখীন হতে পারে। কাজটি চ্যালেঞ্জিং, তাই উদ্ধার অভিযানের জন্য একটি সময়সীমার ভবিষ্যদ্বাণী করাও অযৌক্তিক।
তিনি আরো জানান, আটকেপড়া প্রত্যেক শ্রমিকের জন্য একটি করে মোট ৪১টি অ্যাম্বুলেন্স টানেলের পাশে রাখা হয়েছে। গুরুতর আহত শ্রমিকদের প্লেনে করে নেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
সুড়ঙ্গের ভেতরে বুধবার রাতেই ঢুকে পড়েছিলেন ২১ জন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর উদ্ধারকারী। এরপর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার মধ্যে শ্রমিকদের সুড়ঙ্গ থেকে বের করে আনা হবে। কিন্তু তা করা যায়নি। ওইদিন রাতেই ধ্বংসস্তূপ খুঁড়তে খুঁড়তে আচমকা সামনে চলে আসে লোহার রড। খননযন্ত্র দিয়ে তা সরানো যায়নি। ফলে উদ্ধারকাজ বাধা পায়। রড কেটে রাস্তা ফাঁকা করতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানানো হয়। রডটি কাটতেই বেগ পেতে হয়েছে উদ্ধারকারীদের। এছাড়াও, এক বার কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। টানা খুঁড়তে খুঁড়তে যন্ত্র অতিরিক্ত গরম হয়ে উঠেছিল। ফলে তা ঠান্ডা করার জন্য আরও কিছুটা সময় লাগে।
গত ১২ নভেম্বর উত্তরকাশী জেলার ব্রহ্মতাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের উপর সিল্কিয়ারা এবং ডন্ডালহগাঁওের মধ্যে নির্মাণাধীন সুড়ঙ্গের একাংশ ধসে পড়ে। সুড়ঙ্গটি সাড়ে আট মিটার উঁচু এবং প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ। ভাঙা সুড়ঙ্গের ভেতরেই প্রায় ৬০০ মিটার ধ্বংসস্তূপের পেছনে আটকে পড়েছিলেন শ্রমিকেরা। ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে খুঁড়ে সেই দূরত্ব কমানোর চেষ্টা চলছে।