দুর্বল ও ত্রুটিপূর্ণ সফটওয়্যার ব্যবহারের কারণে ডিসেম্বর ক্লোজিং করতে পারছে না রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকসহ বিশেষায়িত বেশকিছু ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সময় বাড়িয়ে নিলেও তথ্য প্রযুক্তির ত্রুটির কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ব্যাংক এখন প্রচলিত ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হিসাবনিকাশ করছে। সোনালী ব্যাংক গত ডিসেম্বর শেষের বার্ষিক হিসাব সম্পন্ন করতে পেরেছে গত ৩১ জানুয়ারি ২০২২। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, রাষ্ট্রয়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে জবাবদিহিতার অভাব, শীর্ষ ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে অস্বচ্ছতা ও দুর্নীতিতে অভিযুক্তরা স্থান পাওয়ায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা বিচারাধীন রয়েছে এমন ব্যক্তিও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় রয়েছে। ফলে, নিচের দিকেও জবাবদিহিতার চাপ তৈরি হচ্ছে না।
সূত্রমতে, ব্যাংকিং খাতে সফটওয়্যার জালিয়াতির কারণে গ্রাহকরাও ঝুঁকিতে থাকছে। গ্রাহকের তথ্য চুরি, লেনদেনের ঝুঁকি, ব্যাংকে সঞ্চিত অর্থের হিসাবে গরমিল দেখা দিতে পারে। সর্বোপরি গ্রাহক স্বার্থ বিপন্ন হতে পারে। ইতিমধ্যে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি থেকে শুরু করে হ্যাকিংয়ের ঘটনাও ঘটেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের ওপর পরিচালিত এক তদন্তে সফটওয়্যার আপগ্রেড না করে ব্যাংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনাও উদ্ঘাটিত হয়েছে। তথাপি কোনো প্রতিকার হয়নি। মানি লন্ডারিংয়ের ঘটনাও ঘটেছে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণায়ও বলা হয়েছে, এখানকার অর্ধেকেরও বেশি ব্যাংক সাইবার নিরাপত্তা ঝঁকিতে রয়েছে। কিন্তু কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিশেষায়িত বেসিক ব্যাংক, রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ও রূপালী ব্যাংকেও কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার নিয়ে নানা কথা চাউর রয়েছে। যা ব্যাংক ক্লোজিং না হওয়ায় আরো বেশি আলোচনায় আসছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে ব্যবস্থাপনার শীর্ষ পদে একাধিক মেয়াদি চুক্তি, দুদকের মামলা থাকার পরও চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি, ব্যাংকে চাকরির নির্ধারিত বয়স ৬৫ পার হওয়ার পর একই পদে বহাল থাকতে সক্ষম হওয়ায় ‘চেইন অব কমান্ডে’রও ব্যত্যয় ঘটছে।