কিংবদন্তি অভিনেত্রী ডলি জহুর। নব্বইয়ের দশকের সিনেমায় নায়ক-নায়িকাদের মায়ের চরিত্রে তিনি ছিলেন অনেকটা অপ্রতিদ্বন্দ্বী। কাজ করেছেন দেড় শতাধিক চলচ্চিত্রে। দুইবার জিতেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
ডলি জহুর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ বেশকিছু পুরস্কার ফিল্ম আর্কাইভে প্রদান করেছেন। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন আর্কাইভের মহাপরিচালক নিজামূল কবীর। তিনি জানালেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা চিন্তা করেই ডলি জহুর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
নিজামূল কবীর বলেন, ‘ফিল্ম আর্কাইভে সংরক্ষণের জন্য ডলি জহুর তার অর্জিত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ বেশকিছু পুরস্কার প্রদান করেছেন। আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ। আগামী প্রজন্মের কথা ভেবে গুণী এই অভিনেত্রীর এমন সিদ্ধান্ত প্রশংসনীয়।’
১৯৫৩ সালে ঢাকার গ্রিন রোডে জন্ম হয় ডলি জহুরের। সেখানেই বেড়ে ওঠা তার। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে। ১৯৭৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন মঞ্চ নাটক দিয়ে তার অভিনয় যাত্রা শুরু হয়েছিল। সে সময় তিনি যুক্ত হন কথক নাট্যগোষ্ঠীর সঙ্গে। এরপর ১৯৮৩ সালের দিকে শুরু করেন চলচ্চিত্রে অভিনয়। ওই সময়কার নায়কদের স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করতে থাকেন। অল্প দিনেই ইন্ডাস্ট্রিতে শক্ত অবস্থান তৈরি করে নেন।
নব্বই দশকের জনপ্রিয় নায়ক-নায়িকাদের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন ডলি জহুর। বড় পর্দায় অভিনয় করেই তিনি সবচেয়ে বেশি খ্যাতি, পরিচিতি ও সম্মাননা পেয়েছেন। ১৯৯২ সালে মুস্তাফিজুর রহমান পরিচালিত ‘শঙ্খনীল কারাগার’ ছবিটিতে অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে ক্যারিয়ারের প্রথম জাতীয় পুরস্কারটি লাভ করেন। এরপর ২০০৬ সালে কাজী মোরশেদের ‘ঘানি’তে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে জেতেন দ্বিতীয় জাতীয় পুরস্কারটি।
ডলি জহুরের নাটকে অভিষেক হয়েছিল প্রয়াত কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের হাত ধরে। ১৯৮৫ সালে বিখ্যাত এই লেখক ও সাহিত্যিকের ‘এইসব দিনরাত্রি’ নাটকটিতে তিনি অভিনয় করেন।