স্থানীয় সময় রোববার (২৯ জুন) রাতে শুরু হওয়া দীর্ঘ অধিবেশনে নিরপেক্ষ কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস (সিবিও) জানায়, বিলটি আইনে পরিণত হলে আগামী এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ ৩.৩ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়বে এবং ২০৩৪ সালের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যবিমা হারাবে। খবর আল জাজিরার।
রিপাবলিকান নেতারা সিবিও’র হিসাব মানতে নারাজ। তারা ট্রাম্পের ৪ জুলাই, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের মধ্যে বিলটি পাস করার সময়সীমা পূরণে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন।
শনিবার (২৮ জুন) রাতে প্রাথমিক ভোটে বিলটি সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে যায়। একাধিক রিপাবলিকান বিরোধিতা করলেও, ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের হস্তক্ষেপে বিলটি ট্র্যাকে থাকে।
ট্রাম্প তার বিপক্ষে প্রার্থী সমর্থনের হুমকি দেওয়ার পর উত্তর ক্যারোলিনার রিপাবলিকান সিনেটর থম টিলিস বিলের বিপক্ষে ভোট দিয়ে পুনঃনির্বাচনে না দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। মেডিকেড-এ বড় কাটছাঁটের কারণে তিনি ভোট দিতে রাজি হননি।
ট্রাম্প টিলিসের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, “দারুণ খবর! ‘সিনেটর’ থম টিলিস আর নির্বাচন করছেন না।”
তবে কংগ্রেসের কট্টরপন্থী রিপাবলিকানরা স্বাস্থ্যসেবায় আরও বড় কাটছাঁট চাইছেন, এ নিয়ে ট্রাম্পও সতর্ক করে বলেছেন, “স্মরণ রেখো, আবার নির্বাচিত হতে হবে! পাগলামি করো না।”
বিলটিতে প্রায় ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের করছাড় অন্তর্ভুক্ত, ট্রাম্পের ২০১৭ সালের করহার স্থায়ী করা হয়েছে এবং নতুন কিছু করছাড়ও যোগ করা হয়েছে, যেমন টিপে কোনো কর না।
ডেমোক্র্যাটরা বলছেন, এই বিল পাস হলে সবুজ শক্তির (রিনিউএবল এনার্জি) বিনিয়োগ ধ্বংস হবে এবং মেডিকেড ও কঠোর শ্রম-শর্ত আরোপের মাধ্যমে ফুড স্ট্যাম্পে প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন ডলারের ছাঁট করা হবে। বিলটি সীমান্ত ও জাতীয় নিরাপত্তায় ৩৫০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দের প্রস্তাব করছে, যার মধ্যে অভিবাসী বহিষ্কারে অর্থ রয়েছে এবং নতুন ফি আরোপ করা হবে অভিবাসীদের ওপর।
ডেমোক্র্যাট সিনেটররা বিলটি বিলম্বিত করতে ১৬ ঘণ্টা সময় নিয়ে পুরো খসড়া সিনেটে পড়ার উদ্যোগ নেন। সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার বলেন, “রিপাবলিকানরা মাত্র দুই দিন আগে প্রকাশিত এই বিশাল বিলটি দ্রুত পাশ করাতে চাইছে।”
শুমার জানান, “এতে এমন পরিবর্তন আনা হয়েছে যাতে পরিষ্কার শক্তির আরও বড় ক্ষতি হবে, বিদ্যুৎ বিল ১০ শতাংশ বাড়বে এবং ৯ লাখ কর্মসংস্থান হারাবে।”
স্বতন্ত্র সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স বলেন, “এটি আমাদের সময়ের সবচেয়ে বিপজ্জনক আইন।” তিনি অভিযোগ করেন, “ক্ষুধার্ত শিশুদের খাওয়ানোর বা সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা চালু রাখার জন্য অর্থ নেই, অথচ সামরিক খাতে আরও ১৫০ বিলিয়ন ডলার বাড়ানো হচ্ছে।”
অন্যদিকে ট্রাম্পপন্থি সিনেটররা বিলটি পাশ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সিনেটর লিন্ডসি গ্রাহাম বলেন, “আমরা ‘বিগ, বিউটিফুল বিল’ পাশ করব।”
সংসদে বিল নিয়ে বিতর্ক শেষে শুরু হবে “ভোট-অ-রামা” নামের সংশোধনী অধিবেশন, তারপরই হবে চূড়ান্ত ভোট।
যদি সিনেটে বিল পাস হয়, এটি ফের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে যাবে। স্পিকার মাইক জনসন এরই মধ্যে হাউজ সদস্যদের ওয়াশিংটনে তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
