কার কাউন্টিতে নিখোঁজদের মধ্যে রয়েছেন ‘ক্যাম্প মিস্টিক’ নামের গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পের পাঁচজন কিশোরী ও একজন কাউন্সেলর। এই ক্যাম্পটি গুয়াডালুপ নদীর তীরে অবস্থিত।
গভর্নর অ্যাবট জানান, এই ভয়াবহ দুর্যোগে এখন পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে মারা গেছেন অন্তত ১০৯ জন, যাদের মধ্যে কেবল কেরভিল এলাকাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৯৪ জন।
অ্যাবট বলেন, “যতক্ষণ না শেষ নিখোঁজ ব্যক্তিটিও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে, ততক্ষণ আমাদের উদ্ধারকর্মীরা থামবে না।” গভর্নর আশঙ্কা প্রকাশ করেন, নিখোঁজের তালিকায় আরও নাম যুক্ত হতে পারে।
উদ্ধারে নিয়োজিত রয়েছেন জাতীয় গার্ডের জেনারেল থমাস সুলজার। তিনি জানান, উদ্ধার কার্যক্রমে ব্যবহার করা হচ্ছে চিনুক ও ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার, যাদের মধ্যে চারটি এসেছে আর্কানসাস থেকে। রয়েছে উদ্ধারকারী ড্রোনও।
এফবিআই, বর্ডার প্যাট্রোল ও ন্যাশনাল গার্ডসহ বিভিন্ন সংস্থার মোট ২৫০ জন কর্মী কেরভিল এলাকায় উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিয়েছেন।
উদ্ধারে অংশ নেওয়া টিম নামে এক স্বেচ্ছাসেবক বিবিসিকে বলেন, “আমি এর আগে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব টেক্সাসে বন্যা ও হারিকেন দেখেছি, কিন্তু এমন ধ্বংস আগে কখনও দেখিনি।”
অন্য এক স্বেচ্ছাসেবক জাস্টিন বলেন, “এটা যেন খড়ের গাদায় একটা খড় খোঁজার মতো। এত বড় ধ্বংসস্তূপে ক্যাডাভার কুকুরও যথেষ্ট না।”
তিনি জানান, বহু এলাকায় ভারী যন্ত্রপাতি পৌঁছাতে পারছে না। তাই উদ্ধারকর্মীরা হাতে ও ছোট যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ করছেন, তবুও কাঙ্ক্ষিত ফল পাচ্ছেন না।
বন্যার আগে কর্তৃপক্ষ সঠিক সতর্কবার্তা দিতে পেরেছিল কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তীব্র আবহাওয়া, ছুটির দিন ও বসতবাড়ির অবস্থান—সব মিলিয়ে দুর্যোগটি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
গভর্নর অ্যাবট বলেন, “আমরা ঝড়ের পূর্বাভাস পেয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু এর মাত্রা অনুমান করতে পারিনি। কেউ জানত না এটা ৩০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে রূপ নেবে।”

প্রচণ্ড ক্ষয়ক্ষতির জন্য দায় কার—জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, “এই ধরনের প্রশ্ন হেরে যাওয়া লোকদের কথা।”
তিনি একটি ক্রীড়ানুষ্ঠানিক উপমা দিয়ে বলেন, “সেরা দলগুলো দোষ চাপায় না, তারা ভুল থেকে শিক্ষা নেয়।”
কার কাউন্টির গুয়াডালুপ নদী প্রচণ্ড বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে উঠে ভোরে ভেসে যায়। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে রয়েছেন মোবাইল হোমে বসবাসকারী বাসিন্দারা।
২৫ বছর ধরে নদীতীরবর্তী এলাকায় বসবাস করা জাস্টিন ব্রাউন জানান, “এক সপ্তাহ আগে আমি আমার দুই মেয়ে ও কুকুরসহ ব্লু ওক আরভি পার্কে থাকতাম। এখন সেখানে শুধু কাদা আর ধ্বংসস্তূপ। আমাদের আরভি ভেসে গেছে।”
তিনি জানান, পার্কের প্রায় সবাইকে আগেই সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে, যা ছিল বড় একটি সাফল্য।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প শুক্রবার বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন বলে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে নিউ মেক্সিকোর রুইডোসো শহরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হঠাৎ বন্যা জরুরি অবস্থা জারি করেছে জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা (এনডব্লিউএস)। সেখানে ঘরবাড়ি ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে এবং উদ্ধারকারী দল কাজ করছে।
রিও রুইডোসো নদীতে পানির উচ্চতা পৌঁছেছে ১৫ ফুট (প্রায় ৪.৫ মিটার)। তবে দুই ঘণ্টার মধ্যে পানি কিছুটা নেমে যায় বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস।