ভারত ভ্যাকসিন রফতানি বন্ধ করে দেয়ার পর চরম সংকটে পড়েছে বিশ্বের ৯১টি দেশ। দেশগুলো ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের অ্যাস্ট্রাজেনেকা (কোভিশিল্ড) ও নোভাভ্যাক্সের টিকার ওপর নির্ভরশীল। সংকটে পড়া দেশগুলোর বেশিরভাগই আফ্রিকার দেশ, যাদের টিকার মজুদ খুবই কম ছিল। একই সঙ্গে দেশগুলোতে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বি.১.৬১৭.২ ছড়িয়ে পড়ায় বিপদটা আরেকটু বেড়েছে।
বিশ্বের ৯১টি দেশ শুধুমাত্র টিকার সরবরাহ ঘাটতির কারণে চরমভাবে সংকটে পড়েছে। একই সঙ্গে সেরাম থেকে যে পরিমাণ টিকা দেশগুলোকে দেয়ার কথা ছিল তাও দেয়া হয়নি। ফলে ৯১টি দেশে বিপদের শঙ্কা বেড়েছে বলে জানান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন।
ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বি.১.৬১৭.২ ছাড়াও অন্য ধরনগুলো যেভাবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে এতে শঙ্কা আরও বাড়ছে। সৌম্য স্বামীনাথন জানান, আফ্রিকার বেশিরভাগ দেশই নিজেদের মোট জনসংখ্যার মাত্র ০.৫ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে পেরেছে। অনেক দেশ এখন পর্যন্ত তাদের স্বাস্থ্যখাতে নিয়োজিতদেরই টিকা দিতে পারেনি।
টিকার এ অসম বণ্টন অব্যাহত থাকলে বেশ কিছু দেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। করোনার পরবর্তী ঢেউ দেশগুলোকে বিপর্যস্ত করে দিতে পারে বলেও ধারণা করছেন সৌম্য স্বামীনাথন।
গত বছর অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে চুক্তি অনুসারে, সেরাম ইনস্টিটিউট স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ১শ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করবে বলে আশা করা হচ্ছিল। যেখানে কেবলমাত্র ৪০ কোটি ডোজ সরবরাহ করা হয়েছে। টিকাগুলো আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন জোট গ্যাভির মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছিল, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার পর ভারত টিকা রফতানি বন্ধ করে দেয়। নিজ দেশের জনগণের কথা বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে চরম সংকটে পড়েছে দেশটি। বিশ্বে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে ভারত। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩ লক্ষ ৩১ হাজার ৮৯৫ জনের। সবার ওপরে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৯ হাজার ৭৬৭ জনের।