সরকার করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় অযোগ্যতা, দায়িত্বহীনতা ও দুর্নীতির প্রমাণ দিয়েছে। জনগণের এই চরম অনিশ্চয়তা ও জীবনের ঝুঁকি তৈরি করার অপরাধে সরকারকে অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন হতে হবে বলে মনে করে বিএনপি। শনিবার (২৪ এপ্রিল) বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে সোমবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, করোনা মোকাবিলা করতে গিয়ে সরকার শুধু নিজেদের দুর্নীতির সুযোগ খুঁজেছে। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে সমগ্র জাতিকে চরম স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এই চরম অনিশ্চয়তা ও জীবনের ঝুঁকি তৈরির অপরাধে সরকারকে অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। একই সঙ্গে তিনি এ ব্যর্থতার দায় নিয়ে অবিলম্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন।
দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন আমদানিতে সরকার ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপের ব্যর্থতা, দুর্নীতিতে ভ্যাকসিন প্রাপ্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় দলের সভায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সভার সদস্যরা মনে করেন, কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই বিএনপি এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে সরকারকে বলে আসছে।
‘একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া, একটি উৎস থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত যে আত্মঘাতী হতে পারে সে বিষয়ে বিএনপি বরাবরই সতর্ক করে এসেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার শুধু নিজেদের আর্থিক স্বার্থ হাসিলের জন্য নিজে আমদানি না করে তাদের পছন্দমতো চিহ্নিত দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়ে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে সংগ্রহ করায় এবং দেড় কোটি ভ্যাকসিনের অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করেও এখন পর্যন্ত দুই কিস্তিতে মাত্র ৭০ লাখ ডোজ পেয়েছে। ’
তিনি বলেন, ভারত সরকারের রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তের কারণে সেরাম ইনস্টিটিউট বাকি ভ্যাকসিন পাঠাতে অপারগতা জানিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে এখন যে পরিমাণ মজুদ আছে সেটাতে আগামী ১২ দিন চাহিদা মোতাবেক চলবে। কিন্তু তারপর আর সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। এখন পর্যন্ত প্রথম ডোজ প্রায় ৫৬ লাখ এবং দ্বিতীয় ডোজ প্রায় ১৬ লাখ মোট ৭২ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। হার্ড ইনিউনিটি আনতে কমপক্ষে ১২ কোটি ৫০ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া প্রয়োজন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি মনে করে অবিলম্বে মূল্য পরিশোধিত ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য ভারত সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে হবে। ব্যর্থ হলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আইনের আশ্রয় নিতে হবে, জনগণের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ভারতের সংক্রমণের হার মারাত্মক হারে বাড়ায় এবং পশ্চিমবাংলায় নতুন মারাত্মক ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ রোধে ইতোমধ্যে ভারতের আসাম ও উড়িষ্যা পশ্চিমবাংলার সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করেছে। ‘সরকার আজ (সোমবার) থেকে ১৪ দিন স্থলপথের সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। আমরা আগেই সীমান্ত বন্ধের দাবি জানিয়েছিলাম, যেটা সরকার আজ (সোমবার) থেকে কার্যকর করছে। এটা তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে বলে মনে করি। ’