টিকার তিন ডোজ ওমিক্রন থেকে সুরক্ষার চাবিকাঠি বলে যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ওমিক্রন ও ডেল্টা আক্রান্ত রোগীদের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, নতুন ধরন ঠেকাতে দুই ডোজ টিকা অপেক্ষাকৃত কম কার্যকরী। কিন্তু তৃতীয় বুস্টার ডোজ করোনার যেকোনো উপসর্গে আক্রান্ত হওয়া থেকে প্রায় ৭৫ ভাগ সুরক্ষা দেয়।
যুক্তরাজ্যের হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি তাদের প্রতিবেদনে হিসাব করে দেখিয়েছে করোনার নতুন ধরনের বিরুদ্ধে টিকা কতটা কার্যকর। ৫৮১ জন ওমিক্রন ও কয়েক হাজার ডেল্টা রোগীর তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
সীমিত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নতুন ধরনে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও ফাইজারের দুই ডোজ টিকার কার্যকারিতা কমে গেছে। তবে বুস্টার ডোজ করোনার যেকোনো উপসর্গের বিরুদ্ধে প্রায় ৭৫ ভাগ সুরক্ষা দিয়েছে।
মডার্না ও জনসনের টিকার ক্ষেত্রে বিশ্লেষণের মতো যথেষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে টিকা দুটির ক্ষেত্রে ফলের খুব বেশি পরিবর্তন হবে, এমনটি ভাবার কারণ নেই। অবশ্য যুক্তরাজ্যের হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি বলছে, হাসপাতালে চিকিৎসার প্রয়োজন হতো- এমন গুরুতর কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে টিকা ভালো সুরক্ষা দেখিয়েছে।
এদিকে, শুক্রবার বিকেলে যুক্তরাজ্যের লেভেলিং আপ সেক্রেটারি মিশেল গোভ উন্নত দেশের ফার্স্ট মিনিস্টারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে জানিয়েছেন, তার দেশ ‘গভীর উদ্বেগজনক পরিস্থিতি’র মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সরকারের জরুরি কমিটি কোবরার বৈঠক শেষে তিনি বলেন, পদক্ষেপ নেওয়াটাই আসল। যেহেতু নতুন তথ্য-উপাত্ত আসছে, সেহেতু আমরা বিবেচনা করব, কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
যুক্তরাজ্যে নতুন করে ৪৪৮ জন ওমিক্রন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে ওমিক্রন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক হাজার ২৬৫ জনে। শুক্রবার যুক্তরাজ্যে নতুন করে ৫৮ হাজার ১৯৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, ৯ জানুয়ারির পর থেকে যা এক দিনে সর্বোচ্চ।
দেশটির সরকার বলছে, ইংল্যান্ডে কেয়ার হোমগুলোর নির্দেশিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের কাছে আসা দর্শনার্থীর সংখ্যা সীমিত করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমান কোভিড ১৯ ঝুঁকি সমন্বয়ে করোনা পরীক্ষার হার বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রতি দু-তিন দিন অন্তর ওমিক্রন রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন। যুক্তরাজ্যের হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি অনুমান করছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি নাগাদ দেশটিতে দৈনিক শনাক্তের অর্ধেকই হবে ওমিক্রনে আক্রান্ত। এভাবে চলতে থাকলে মাসের শেষে দৈনিক শনাক্ত এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে।