আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন সামনে রেখে একদিকে সন্ত্রাস সহিংসতা হচ্ছে, অন্যদিকে ভয়ঙ্কর গুজবের ডালপালা বিস্তার করা হচ্ছে। মানবাধিকারের প্রবক্তা টিআইবি বিএনপির ভাবাদর্শের প্রবক্তা হয়ে চোখ থাকতে অন্ধ হয়ে আছে। টিআইবি বিএনপির শাখা সংগঠন হয়ে গেছে।
আজ (শুক্রবার) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন গণতন্ত্রের প্রাণ। সরকারি দল হিসেবে নির্বাচন ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক করাই আওয়ামী লীগের দায়িত্ব। যে কোনো মূল্যে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করে রেকর্ড করতে চায় আওয়ামী লীগ।
তিনি আরও বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে নির্বাচন কমিশনের নেওয়া ব্যবস্থাকে স্বাগত জানাচ্ছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ সমর্থন করেছে। নির্বাচন কমিশনকে কোনোভাবে প্রভাবিত করছে না আওয়ামী লীগ।
বিজয় দিবসের কর্মসূচি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের কর্মসূচি শুরু হবে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে। ১৭ ডিসেম্বর আমাদের আলোচনা সভা। ১৮ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় শোভাযাত্রা করা হবে। সেদিন একযোগে সারা দেশে বিজয় শোভাযাত্রা করা হবে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, বিএনপি ও তার দোসরদের একদিকে সন্ত্রাস-সহিংসতা, অন্যদিকে গুজব ভয়ংকরভাবে বিস্তৃত হচ্ছে।
টিআইবির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের দেশে এখন যারা মুক্তবুদ্ধির চর্চা করেন বলে দাবি করেন, যারা মানবাধিকারের প্রবক্তা, যেমন টিআইবি… ২৮টি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, তারপরও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন কেন হবে না, এ প্রশ্নের উত্তর টিআইবির কাছে পাওয়া যাবে না। তারা জেনেশুনেই এটা করছে। আমরা টিআইবির কাছে জানতে চাই, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে কী বুঝায়? ২৮টি নিবন্ধিত দল অংশ নিচ্ছে, বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচন থেকে দূরে রয়েছে, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না, এর অর্থটা কী? টিআইবি বিএনপির শাখা-সংগঠন। তারা একই সুরে কথা বলে।
বিএনপি নেতা মঈন খানের ভাগাভাগি নির্বাচন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, কিসের ভাগাভাগি? আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যেকোনো মূল্যে এই নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসেবে, একটা রেকর্ড আমরা দেখাতে চাই। নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রাণ, কাজে নির্বাচন ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক করায় আমাদেরও দায়িত্ব আছে।
নির্বাচনের আচরণবিধি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে যেগুলোকে আমরা সমর্থন দিয়েছি। আমাদের যেসব প্রার্থী প্রার্থিতা হারিয়েছে, আমরা কারও ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করার কোনো চেষ্টা করিনি এবং করব না।
ওবায়দুল কাদের বলেন এখন শরিক দলের যত নেতা আছেন, তাদের সবার এবার নির্বাচন করার সুযোগ আছে। তারা যার যার প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। কারো ব্যাপারে কোনো বাধা নেই। জাতীয় পার্টি তাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করবে। ১৪ দলে কিছু নৌকা দেব। এরই মধ্যে আমি ১৪ দলের সমন্বয়ককে আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। নির্বাচন তারা সবাই করুক, তাদের দলের প্রতীক নিয়ে, সাতটা নির্বাচন এলাকায় আমরা নৌকার ছাড় দিতে পারব। এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকালই আমরা জানিয়ে দিয়েছি। তিনি তো গণমাধ্যমকেও বলে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা কাউকে বিজয়ের গ্যারান্টি দিতে পারব না। আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আমারও বিজয়ের গ্যারান্টি নেই। আমাকেও চারজনের সঙ্গে লড়াই করতে হবে। যদি তাদের মধ্যে কেউ জিতে যায়, আমাকে মানতে হবে। এখানে হার-জিতের প্রশ্ন হবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের বৈঠকের প্রসঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলাপ আলোচনা চলছে। সবাই শুধু বিভিন্ন দলের সাথে আসন সমঝোতা নিয়ে কথা বলেন। এই সময়টাকে, আমাদের এই অ্যালায়েন্সটাকে আমরা যতটা রাজনৈতিক মূল্য দিচ্ছি, আসনের ব্যাপারটা কম।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।