দুই বছরের বেশি সময় ধরে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দেশের জনপ্রিয় নায়ক ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। দীর্ঘ চিকিৎসার পর এখন তিনি শারীরিকভাবে কিছুটা সুস্থ। ফিরতে চান দেশে।
এদিকে আজ রোববার সকালে একটি সংবাদমাধ্যমে ফারুকের স্ত্রী জানান, হাসপাতালের বিল বকেয়া থাকায় দেশে ফিরতে বিলম্ব হচ্ছে এ নায়কের। এরপরই দেশের গণমাধ্যমগুলোর শিরোনামে চলে আসে, টাকার অভাবে দেশে ফিরতে পারছেন না ফারুক। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন ফারহানা পাঠান। তিনি জানালেন, টাকার অভাবে ফারুকের দেশে ফিরতে না পারার খবরটি সত্য নয়।’
এ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে ফারহানা পাঠান বলেন, ‘হাসপাতালের বিল দিতে পারছি না এটা একদমই ঠিক নয়। এমন কথা যেন না লেখা হয়। ফারুক ডাক্তার লাইয়ের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি এক মাস সিঙ্গাপুরের বাইরে ছিলেন। দু’দিন আগে তিনি দেশে ফিরেছেন। তাই ফাইনালি ডাক্তার লাইয়ের পরামর্শ ছাড়া এখান থেকে ছাড়পত্র নেব না।’
ফারুকের স্ত্রী এ সময় আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এখানে ফারুকের চিকিৎসা করা হচ্ছে। এই হাসপাতালের চিকিৎসা খরচ অনেক বেশি। এজন্য আমরা আমাদের সম্পত্তি বিক্রি করেছি। ফ্ল্যাট ও জমি ছাড়া ব্যাংকের টাকাও খরচ করেছি। প্রধানমন্ত্রী ফারুকের চিকিৎসার জন্য এক লাখ ডলার দিয়েছিলেন। আমরা তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ। এখন আমরা পারিবারিকভাবে হাসপাতালের যাবতীয় বিল পরিশোধ করছি। বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে টাকা যোগাড় করে আনতে গেলেও একটু সময় লাগে। তার মানে এই না যে আমরা বিল পরিশোধ করতে পারছি না।’
সবশেষে ফারুকের শারীরিক সুস্থতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ডাক্তার বলেছেন ফারুক এখন পুরোপুরি সুস্থ। তাই আমরা আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামঝিতে ফারুককে নিয়ে দেশে ফিরব, ইনশাল্লাহ।’
এর আগে সংবাদমাধ্যমের কাছে ফারুকের দেশে ফেরা নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘দেশের মাটিতে ফিরতে তো সবারই মন চায়। চাইলেই কী ফেরা সম্ভব! সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে প্রায় দুই বছর চিকিৎসা নিচ্ছি। ওই হাসপাতালের চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। অনেক টাকা বিল হয়েছে। সম্পত্তি বিক্রি ও ব্যাংকের টাকা দিয়ে কিছু বিল দিয়েছি। এখন চেষ্টা করছি বাকি বিল পরিশোধের। সব বিল পরিশোধ করলেই কেবল হাসপাতাল থেকে ছুটি মিলবে।’
সেসময় তিনি আরও বলেছিলেন, ‘দেশে আসার জন্য ফারুক উদগ্রীব। জমে আছে সংসদীয় এলাকার অনেক কাজকর্ম। দেশে ফিরে কাজগুলো সারবেন বলেছেন। আগামী মার্চের মাঝামাঝি দেশে আসার ইচ্ছা রয়েছে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে বিল পরিশোধের ওপর। দেখা যাক কী হয়।’
২০২১ সালের ৪ মার্চ নিয়মিত চেকআপের জন্য সিঙ্গাপুর যান ফারুক। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উচ্চ রক্তচাপ, মস্তিস্ক, স্নায়ুতন্ত্রের নানা সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। ছিল পুরোনো বেশ কিছু শারীরিক জটিলতাও। চার মাস ছিলেন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ)। সেমি কোমায় কেটেছে আরও চার মাস। কয়েক মাস তার শারীরিক অবস্থার কখনও উন্নতি, আবার কখনও অবনতি হয়েছে। ছিল নানা শঙ্কাও। তবে কখনও হাল ছাড়েননি তাঁর পরিবারের সদস্যরা, চালিয়েছেন চিকিৎসা। মাঝে শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল, তাকে দীর্ঘদিন লাইফ সাপোর্টেও রাখা হয়েছিল।