স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাত্র ১৩১ রানেই গুটিয়ে গেলো বাংলাদেশ। ৪১ দশমিক ৫ ওভারেই শেষ হয় টাইগারদের ইনিংস। সর্বোচ্চ ২৭ রান আসে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। উদ্বোধন করতে এসে ছক্কা মেরে রানের খাতা খুলেছিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। নিজের ৩২তম জন্মদিনে ভালো করার ইঙ্গিত দিলেও বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেননি তিনি। দলীয় ১৯ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ১৩ রানেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। ওয়ানডাউনে নামা ফর্মহীনে থাকা সৌম্য সরকারও ফেরেন শূন্য রানে।
এরপর লিটন দাশকে নিয়ে ইনিংস লম্বা করতে চেয়েছিলেন মুশফিকুর রহীম। কিন্তু ১৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ৪২ রানের মাথায় জেমস নিশামের বলে ট্রেন্ট বোল্টের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরতে হয় লিটনকে। আউট হওয়ার আগে ৩৬ বলে একটি চারে ১৯ রান করেন লিটন।
অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম এবার দলের হাল ধরলে কিছুটা স্বস্তি ফেরে টাইগার শিবিরে। প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে দলকে সম্মানজনক সংগ্রহের পথেই রেখেছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। তবে না, নামের প্রতি এদিন সুবিচার করতে পারেননি মুশি। দলীয় ৬৯ রানের মাথায় ৪৯ বলে ২৩ রানের ইনিংস খেলে স্লিপে থাকা মার্টিন গাপটিলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মুশি। টাইগার এই ব্যাটসমানের উইকেটটি তুলে নেন জেমস নিশাম।
আর ভাগ্যবিড়ম্বনায় মোহাম্মদ মিথুনকেও মাঠ ছাড়তে হয় ৯ রান করেই। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে আসা বল স্ট্যাম্পে লাগার আগে বোলারের স্পর্শে আউট হতে হয় মিথুনকে। আর ১০ বল খেলে ১ রান করে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর অভিষেক হওয়া মেহেদী হাসান কিছুটা হুঙ্কারের ইঙ্গিত দিলেও বেশিক্ষণ ব্যাট করতে পারেননি। মিচেল স্যান্টনারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে হেনরি নিকোলসের হাতে বল তুলে দিয়ে ২০ বলে ১৪ রানে ফেরেন মেহেদি হাসান। আর তাতেই মাত্র ৯৮ রানে ৭ম উইকেটের পতন ঘটে টাইগারদের।
এরপর পেসার তাসকিন আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘ সময়ের জুটি গড়েন রিয়াদ। তবে ব্যাটিং পাওয়ার প্লের প্রথম বলে ম্যাট হেনরিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিচেল স্যান্টনারের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন রিয়াদ। আর তাতেই বিপদের মুহূর্তে ৫৪ বলে ২৭ রানের ইনিংসের খেলে ফিরতে হয় তাকে।
এরপর আর খুব বেশি খুব বেশি সময় দেয়নি কিউই বোলাররা। ট্রেন্ট বোল্ট দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৪২তম ওভারের তৃতীয় বলে হাসান মাহমুদকে বোল্ড করেন আর ৫ম বলে তাককিন আহমেদ স্যান্টনারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এর আগে ৩২ বলে ১০ রানের ইনিংস খেলেন তাসকিন। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে তার জুটিটাই টাইগারদের ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটি।
কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট শিকার করেন ট্রেন্ট বোল্ট। ৮.৫ ওভার বল করে মাত্র ২৭ রানের বিনিময়ে তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, হাসান মাহমুদ এবং তাসকিনের উইকেট নেন তিনি। কিউই অধিনায়ক টম লাথাম টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এই ম্যাচ দিয়েই অভিষেক হলো, তরুণ অফ স্পিনার শেখ মেহেদি হাসানের। তিনি বাংলাদেশের ১৩৫তম ওয়ানডে ক্রিকেটার।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
বাংলাদেশ: ১৩১/১০, ৪১.৫ ওভার, (তামিম ১৩, লিটন ১৯, সৌম্য ০, মুশফিক ২৩, মিঠুন ৯, মাহমুদউল্লাহ ২৭, মিরাজ ১, মেহেদি হাসান ১৪, তাসকিন ১০, মাহমুদ ১ এবং মোস্তাফিজুর ১*); (বোল্ট ৮.৫-০-২৭-৪, হেনরি ৯-১-২৬-১, নিশাম ৮-১-২৭-২, স্যান্টনার ৮-০-২৩-২, কাইল জেমিসন ৮-১-২৫-০)