ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আজ বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন। তিনি জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ নিয়ে আসছেন। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী (বিএএফ) বঙ্গবন্ধু ঘাঁটিতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। জয়শঙ্কর বিকেল ৪টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
এরপর বিকেল ৫টায় ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে জয়শঙ্করের সম্মানে ইফতার এবং নৈশভোজের আয়োজন করবেন। এর আগে বুধবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জয়শঙ্করের এ সফরকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় উচ্চপর্যায়ের সফর এবং সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে।
‘এবারের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভিন্ন’, জানিয়ে তিনি বলেন, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আফগানিস্তানে মানবিক বিপর্যয়, শ্রীলঙ্কায় অস্থিরতাসহ অনেককিছু হচ্ছে— যা ভারতের মতো বড় দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ পরিস্থিতিতে ভারত তার বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে একই ধরনের কৌশল নিয়ে আলোচনা করতেই পারে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২১ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোভিন্দ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকা সফর করেন। এর ফিরতি সফর হিসেবে বাংলাদেশের শীর্ষ নেতৃত্ব দিল্লি যাবেন সেটাই স্বাভাবিক। সেই সফরের আমন্ত্রণ বার্তা জয়শঙ্কর হয়তো নিয়ে আসছেন বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
কুশিয়ারা নদীর পানি উত্তোলন এবং রহিমপুর খাল নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে। এ বিষয়টিও এবারে আলোচিত হবে। এ বিষয়ে সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেন, সীমান্ত লাগোয়া রহিমপুর খাল হলে বাংলাদেশের পাঁচ হাজার একর জমিতে সেচ সুবিধা দেওয়া সম্ভব। কিন্তু প্রকল্পটি ভারতের আপত্তির কারণে আটকে আছে।
তিস্তা পানির নদী বণ্টন, অন্যান্য আরও ৬ নদীর পানি বণ্টনের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশ থেকে পাট আমদানির ওপর অ্যান্টি ডাম্পিং ডিউটি আরোপ করেছে ভারত। এটি তুলে নেওয়ার জন্য একাধিকবার অনুরোধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, কানেক্টিভিটি যত বাড়বে, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া মানুষে মানুষে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্যও কানেক্টিভিটি প্রয়োজন। সেটির জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।