দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা (৭৯) আদালত অবমাননার দায়ে কারাভোগের ঘটনার বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন তার অনুসারীরা। গত কয়েকদিনের রাজপথে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তাদের মধ্যে ২৮ জনকে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। কোয়াজুলু নাটাল প্রাদেশিক পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার ব্যক্তিরা জনসাধারণের সঙ্গে সহিংস আচরণ, চুরি, সম্পত্তির ক্ষতি ও ভয় দেখানোর অভিযোগে অভিযুক্ত।
কোয়াজুলু নাটাল প্রাদেশিক পুলিশের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নিকার বলেছেন, এমপাঞ্জেনি এলাকায় রাস্তাঘাট বিছিন্ন করায় সেখানে পুলিশ ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। আর বাকিরা শুক্রবার রাত ও শনিবার ভোরের মধ্যে মুই নদী অঞ্চলসহ প্রদেশ জুড়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার হয়েছেন।
কর্তৃপক্ষ জনসাধারণের উদ্দেশ্যে সর্তকবার্তা জানিয়ে বলেছে, যারা লোকজন জড়ো করে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালাতে উৎসাহী করছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উসকানিমূলক প্রচারণা চালানো শুরু করেছে তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাদের আইনের আওতায় আনতে ইতোমধ্যে কোয়াজুলু নাটাল পুলিশ সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজে নেমে পড়েছে।
‘ফ্রি জ্যাকব জুমা’ ব্যানারে জুমার অনুসারীরা তার মুক্তির দাবি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শুক্রবার রাতে কোয়াজুলু নাটাল প্রাদেশিক হাইওয়ে একযোগে ২৩টি ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করে ভস্মীভূত করার মাধ্যমে বিক্ষোভ আরও বেশি ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠেছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে, বর্তমান পরিস্থিতিতে জ্যাকব জুমার কারাবাস নিয়ে তার স্বাস্থ্যের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ‘জুমা ফাউন্ডেশন’।
জ্যাকব জুমার বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতির তদন্তকারীদের তথ্যপ্রমাণ দিয়ে সহযোগিতা না করায় গত ২৯ জুন সকালে আদালত তাকে ১৫ মাসের কারাদণ্ডে করে রায় দেন। রায়ে পাঁচ দিনের মধ্যে যেকোনো থানায় তাকে অত্মসমর্পণ করার সময় বেঁধে দেয়া হয়। এরপর গত ৮ জুলাই তিনি আত্মসমর্পণ করেন। জুমার আইনজীবী পরিস্থিতি বিবেচনায় সাজা স্থগিত করার জন্য আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে জুমাকে কারাগারে পাঠান।
জ্যাকব জুমা (৭৯) ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারি দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের (এএনসি) প্রধান ও রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে দল ও রাষ্ট্র প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। বর্তমান তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, ঘুষ ও দুর্নীতি ১৯টি মামলা বিচার প্রক্রিয়ায় আছে।