জীবিকার তাগিদে সৌদি গিয়ে ৭ জন ফিরলেন লাশ হয়ে

সৌদি আরবের দাম্মামে ফার্নিচারের কারখানায় আগুনে মৃত আট বাংলাদেশির মধ্যে সাতজন রাজশাহী অঞ্চলের। বুধবার (৯ আগস্ট) দুপুরে ২৭ দিন পর মরদেহগুলো এসে রাজশাহীতে পৌঁছেছে।

এর আগে গত ১৪ জুলাই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পরে তাদের মরদেহ হুফুফ কিং ফাহাদ মর্গে রাখা ছিল।

রাজশাহী অঞ্চলের মৃত ৭ জন হলেন, বাগমারা উপজেলার বারইপাড়ার জফির উদ্দিনের ছেলে রুবেল হোসাইন, একই এলাকার জমিরের ছেলে মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম, শাহাদাত হোসাইনের ছেলে মো. আরিফ, বাগমারার বড় মাধাইমুরির আনিসুর রহমান সরদারের ছেলে ফিরুজ আলী সরদার, নওগাঁর আত্রাই উপজেলার উদয়পুরের মন্ডল পাড়ার মৃত রহমান সরদারের ছেলে বারেক সরদার (৪৫), একই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের ঝনঝনিয়া গ্রামের মৃত আজিজার প্রামাণিকের ছেলে রমজান আলী (৩৩), নাটোরের নলডাঙ্গার খাজুরা ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের মৃত দবির উদ্দিনের ছেলে ওবায়দুল হক (৩৩)।

এদিকে দুপুর পৌনে ২টার দিকে রাজশাহীর বাগমারা, নাটোর ও নওগাঁর গ্রামের বাড়িতে লাশবাহী গাড়িতে মরদেহগুলো পৌঁছালে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এর আগে তাদের মরদেহ দেশে আসার খবরে পরিবারের পক্ষ থেকে জানাজা ও দাফনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বাগমারা উপজেলার বারইপাড়ার জফির উদ্দিনের ছেলে রুবেল হোসাইনের জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।

রুবেলের স্বজনেরা জানান, তারা দীর্ঘ ২৭ দিন পরে মরদেহগুলো বুঝে পেয়েছে। এতদিন তারা মরদেহের অপেক্ষায় ছিলেন। দেরিতে হলেও মরদেহ বুঝে পেয়ে সন্তুষ্ট তারা।

এ বিষয়ে বাগমারা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এ এফ এম আবু সুফিয়ান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সৌদি আরবের অগ্নিকাণ্ডে মৃতদের মধ্যে চারজন বাগমারার। কিছুক্ষণ আগে তাদের মরদেহ এলাকায় নিয়ে আসা হয়। সবার জানাজা ও দাফনের প্রস্তুতি চলছে। পরবর্তী
সময়ে তাদের পরিবাদের সরকারিভাবে সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।

একই ঘটনায় মৃত আরেক জন হলেন, নাটোরের নলডাঙ্গার খাজুরা ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের মৃত দবির উদ্দিনের ছেলে ওবায়দুল হক (৩৩)। তার মরদেহও গ্রামের বাড়িতে পৌঁছেছে।

এ বিষয়ে নাটোরের নলডাঙ্গার ৩নং খাজুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, ওবাইদুলের মরদেহ পরিবার বুঝে পেয়েছে। কবর আগে থেকে প্রস্তুত করা ছিল। দুপুর আড়াইটায় চাঁদপুর বাজারে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

সৌদি আরবের এ ঘটনায় নওগাঁর আত্রাই উপজেলার উদয়পুরের মন্ডল পাড়ার মৃত রহমান সরদারের ছেলে বারেক সরদার (৪৫), একই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের ঝনঝনিয়া গ্রামের মৃত আজিজার প্রামাণিকের ছেলে রমজান আলীর (৩৩) মৃত্যু হয়। দুপুরে তাদের মরদেহ নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

এ বিষয়ে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকতেখারুল ইসলাম বলেন, মৃতদের মরদেহ আসার পরে বাদ জোহর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় সৌদি আরবের দাম্মামে ফার্নিচারের কারখানায় আগুনে আটজন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে সাতজন রাজশাহী অঞ্চলের। মৃত আরেকজন হলেন, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আলিনগর ইউনিয়নের সস্তাল গ্রামের ইউনুস ঢালী ছেলে জুবায়ের ঢালী।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Welcome Back!

Login to your account below

Create New Account!

Fill the forms below to register

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.