শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেছেন, বাংলাদেশ এখন হংকং কনভেনশন-২০০৯ অনুসমর্থন বাস্তবায়নে কাজ করছে। আগামী দুই থেকে তিন বছর যদি আমরা কাজ করে যাই, ভবিষ্যতে জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ শিল্পে বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে ভালো অবস্থান করে নিতে পারবে।
তিনি বলেন, জাপান ও নরওয়ের রাষ্ট্রদূত আজ সীতাকুণ্ড পরিদর্শন শেষ করে তাদের মতামত উপস্থাপন করবেন। গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্পের মতো এ শিল্পের বাজারও প্রস্তুত রয়েছে। নরওয়ে আমাদের কর্মীদের আরও প্রশিক্ষণ দিয়ে সাহায্য করবে বলে আশ্বস্ত করেছে।
শনিবার (১১ মার্চ) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে জাহাজ পুনঃ প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের উন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফ-লাইন। সীতাকুণ্ড শিপ-ইয়ার্ডে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তাই জাহাজ পুনর্নির্মাণ শিল্প পরিদর্শনের জন্য জাপান ও নরওয়ের রাষ্ট্রদূত চট্টগ্রামে এসেছেন। এ শিল্পে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে। অন্যান্য শিল্পের মতো এ শিল্পেও স্বীকৃতি অর্জনের জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। জাহাজ শিল্পের উন্নতি নির্ভর করে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ওপর।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে অন্যতম প্রধান জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকারী দেশ। বাংলাদেশে ১৬৭টি জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ ইয়ার্ড রয়েছে, যা চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ড উপজেলায় অবস্থিত। এখানে বার্ষিক জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ সক্ষমতা ১০ মিলিয়ন মেট্রিক টনেরও বেশি। বার্ষিক জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ শিল্পের গড় প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৪ শতাংশ। দেশের সামগ্রিক আয়রন চাহিদার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ আসে জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ থেকে। এ খাত থেকে আয় হয় ৮শ মিলিয়ন ডলারেরও অধিক এবং সরকারের রাজস্ব আয় হয় ১০০ থেকে ১২০ মিলিয়ন ডলার।
এ শিল্পে প্রত্যক্ষভাবে ৩০ থেকে ৫০ হাজার মানুষ নিয়োজিত এবং পরোক্ষভাবে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ নির্ভরশীল। এ শিল্পের ওপর ৩শর বেশি রি-রোলিং স্টিল মিল নির্ভরশীল। দেশের সামগ্রিক টেকসই উন্নয়নে এ শিল্প ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। দেশের শিল্প উন্নয়নের স্বার্থে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখা অপরিহার্য।