সুয়েজ খালে বৃহৎ কন্টেইনার জাহাজ আটকে যাওয়ার কারণে সৃষ্ট নজিরবিহীন ট্রাফিক জ্যামের প্রভাবে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে মিসর। দেশটির প্রধান ব্যাংক প্রতিষ্ঠানগুলোর জারি করা আর্থিক অনুমানে এ তথ্য জানানো হয়েছে। লয়েডের তালিকা গণনা অনুযায়ী, পশ্চিম দিকের ট্র্যাফিকের মূল্য দৈনিক ৫ দশমিক ১ বিলিয়ন এবং পূর্ব দিকের মূল্য ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন।
ব্লুমবার্গের নেভিগেশন তথ্য অনুসারে, বর্তমানে ১৮৫টি জাহাজ সুয়েজ খাল পার হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এই জাহাজগুলোর মধ্যে ২৭টি ট্যাঙ্কার প্রায় এক দশমিক ৯ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত তেল বহন করছে। এদিকে মিসরীয় কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে যে, দুর্ঘটনার কারণে আটকা পরা জাহাজগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি তারা বিবেচনা করছে।
জানা যায়, আটকে যাওয়া জাহাজটির নাম ‘এভার গিভেন’। এটি প্রায় ৪০০ মিটার লম্বা (৩৯৯.৯৪ মিটার)। এর প্রস্থ ৫৯ মিটার। আটকে পড়ার পর জাহাজটি টেনে বের করে নিতে কয়েকটি উদ্ধারকারী নৌকা (টাগ বোট) মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ধারে বেশ কয়েকটি ড্রেজারও মোতায়েন করা হয়েছে। এর একপাশ মাটিতে আটকে থাকার কারণে উদ্ধারে বেগ পেতে হচ্ছে।
সমুদ্রে চলাচলকারী জাহাজে নজরদারি ও ট্রাকিংয়ে নিযুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ১২০ মাইল দীর্ঘ এই খাল পার হতে শতাধিক জাহাজ এখন অপেক্ষা করছে। এমনকি আটকে পড়া জাহাজটি সরিয়ে খুব দ্রুত সুয়েজ খাল চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলেও সৃষ্ট জাহাজ-জট কাটাতে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। আর এতে ব্যাহত হতে পারে বিশ্ব বাণিজ্যের পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, সুয়েজ খাল দিয়ে সমুদ্রে দৈনিক হিসেবে চলাচলকারী জাহাজের ৩০ শতাংশই যাতায়াত করে থাকে। সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে বছরজুড়ে প্রায় ১৯ হাজার জাহাজ চলাচল করেছে এই খাল দিয়ে। দৈনিক হিসেবে যা প্রায় ৫২টি।