ইরানে হিজাব বিরোধী আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল দেশটির অস্কারজয়ী অভিনেত্রী তারানেহ আলিদুস্তিকে। গ্রেফতারের তিন সপ্তাহ পর ৪ জানুয়ারি মুক্তি পেয়েছেন তিনি। একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
আলিদুস্তির জামিনে মুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী জাহরা মিনোই। মুক্তির পর বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা যায় অভিনেত্রীকে। ওই মুহূর্তের কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
তারানেহর গ্রেফতারির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক চলচ্চিত্র পরিচালক ও অভিনেতা। পাশাপাশি পশ্চিমা চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বদের অনেকে নিন্দা জ্ঞাপন করেন সেসময়। হলিউড তারকা কেট উইনসলেট বিনাশর্তে মুক্তি দাবি করেছিলেন আলিদুস্তির।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর হিজাব না পরার অপরাধে পুলিশি হেফাজতে কুর্দিস তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যু হয়েছিল। ওই দিনই ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করে তারানেহ লেখেন, বন্দিত্বের অভিশাপ। গত ৯ নভেম্বর স্কার্ফ পরা ছাড়া নিজের ছবি পোস্ট করেন। সেখানে নারীদের স্বাধীনতার কথা তুলে ধরেন তিনি।
গত ৮ ডিসেম্বর মেহসিন শিকারি নামে এক বিক্ষোভকারীকে সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণার অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আয়াতুল্লা আসলি খামেইনি সরকার। আর ন্যক্কারজনক ঘটনা নিয়ে ইনস্টাগ্রামে এক পোস্ট করেন তারানেহ। তাতে তিনি লেখেন, ‘আপনার নীরবতা নির্যাতক আর নিপীড়কদের সমর্থন করছে।’
ইরান সরকারের দমন পীড়নের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নিস্ক্রিয়তা নিয়েও নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিচালক আসগর ফরহাদীর ‘দ্য সেলসম্যান’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুবাদেই অস্কার পেয়েছিলেন তারানেহ আলিদুস্তি। চলতি বছরে কান চলচ্চিত্র উৎসবে তার অভিনীত ‘লায়লাস ব্রাদার্স’ প্রদর্শিত হয়। ওই ছবিও দর্শকের প্রশংসা কুড়িয়েছিল।
বিশ্বের সিনেমাপ্রেমীদের কাছে যথেষ্ট জনপ্রিয় তারানেহ। শুধুমাত্র ইনস্টাগ্রামেই তার ৮০ লাখের বেশি অনুসারী আছেন। হিজাব বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পরেই আন্দোলনের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছিলেন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী।