প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা জামালপুর-৪ আসনের সাংসদ ডা. মো. মুরাদ হাসানকে এবার জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ।
তিনি বলেন, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের জেরে আজ বিকেল ৪টায় জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জামালপুরের বকুলতলায় দলীয় কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাতে এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগকে জানানো হবে, কেন্দ্র চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাকী বিল্লাহর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দলীয় ভাবমূর্তি বিনষ্ট, অগঠনতান্ত্রিক ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ডা. মো. মুরাদ হাসানকে অব্যাহতির এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দলীয় গঠনতন্ত্রের ৪৭(৯) ধারা মোতাবেক ডা. মুরাদকে অব্যাহতি প্রদান করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট চিঠি পাঠাবে জেলা আওয়ামী লীগ।
এর আগেই অবশ্য মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগ থেকে ডা. মুরাদকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। ডা. মো. মুরাদ হাসান একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালেও তিনি একই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
২০১৯ সালে সরকার গঠনের সময় মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে ৫ মাসের মাথায় ওই বছরের ১৯ মে তার দফতর পরিবর্তন করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী করা হয়।
বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বেশ কয়েকদিন ধরেই আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন ডা. মুরাদ হাসান। বিশেষ করে রাষ্ট্রধর্ম, রাজনীতি, খালেদা জিয়ার নাতনি ও সবশেষ ফোনালাপ ফাঁস নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। তার উল্টাপাল্টা মন্তব্য এবং অস্বাভাবিক আচরণের কারণে দলীয় সহকর্মীদেরও বিব্রত হতে হয়েছে।
এসবের জেরে সোমবার রাতে ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর আজ মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
এদিকে মুরাদ হাসানকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে আগামী কার্যনির্বাহী সভায় সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। সংশ্লিষ্টদের মতে, দল থেকে বহিষ্কার হলে তাকে সংসদ সদস্যপদও হারাতে হতে পারে।