শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাওলানা ভাসানী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আমিনুর রহমান খানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে হলের ফটকে এ বিক্ষোভ করা হয়। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বলায় তারা পেছনে থেকে শিক্ষার্থীদের ইন্ধন দিয়ে বিক্ষোভ করাচ্ছে বলে দাবি করেছেন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আমিনুর রহমান খান।
এর আগে, রোববার প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সোহেল আহমেদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন এবং ওই শিক্ষকের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে নামফলক খুলে ফেলেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার রাত ১০টার দিকে হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ওয়ার্ডেন ও হাউস টিউটরদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ চাওয়া শিক্ষার্থীরা। তবে ওই আলোচনায় প্রাধ্যক্ষ আমিনুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন না। আলোচনায় শিক্ষার্থীরা রাতের মধ্যেই প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি করেন।
এর মধ্যে হলের আলোচনায় বসা ওই শিক্ষকেরা প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদেরকে প্রাধ্যক্ষ জানিয়েছেন, উপাচার্য তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, তিনি বললে পদত্যাগ করবেন। তা ছাড়া স্বেচ্ছায় তিনি পদত্যাগ করবেন না। এরপরই একদল শিক্ষার্থী হলের ফটকে বিক্ষোভ শুরু করেন।
রাতের মধ্যেই প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আলোচনায় উপস্থিত ও বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান (তাজ) বলেন, আমাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হলের শিক্ষকেরা আমাদের সঙ্গে মিটিং করেন। আমরা তার পদত্যাগের দাবি জানাই। পরে শিক্ষকদের একজন প্রভোস্টকে মোবাইল ফোনে পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পদত্যাগ করবেন না বলে জানান। এর প্রতিবাদে আমরা বিক্ষোভ করছি।
প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে লিখিত অভিযোগে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, প্রাধ্যক্ষ হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করেন, মসজিদ সংস্কারে অসহযোগিতা, হলের সব কর্মচারীর কাজের তদারকিতে অবহেলা ও হলের নোংরা পরিবেশ নিয়ে কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়া, রিডিংরুম সংস্কারে দায়িত্বহীনতা, শিক্ষার্থীদের রুম সংস্কারে অনীহা ও দীর্ঘসূত্রতা, ডাইনিংয়ের খাবারের মান নিয়ন্ত্রণের কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়া, হলের দীর্ঘদিনের ইন্টারনেট সমস্যার সমাধান না করা, হলের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলাসামগ্রী দিতে অস্বীকৃতি, বিশুদ্ধ পানির ফিল্টারের কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া, ওয়াশরুম সংস্কার ও পরিষ্কারে তদারকি না করা, কোনো শিক্ষার্থী রাতে ফোন দিলে বিভিন্ন ধরনের কৈফিয়ত চাওয়া ইত্যাদি।
এর আগে, রোববার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আমিনুর রহমান বলেন হলের বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের জন্য সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে ইতিমধ্যে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনাও করেছি।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বলেছি। তারা পেছনে থেকে শিক্ষার্থীদের ইন্ধন দিয়ে এসব কাজ করাচ্ছে। মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার বিষয়ে আমরা অতি দ্রুত সংবাদ সম্মেলন করব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।