জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. তারেক শামসুর রেহমানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার ভবনে থাকা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর অঞ্চল ও পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক শফিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অধ্যাপক শফিকুর রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, ‘সকাল থেকে তার (ড. তারেক শামসুর রেহমান) কোনো যোগাযোগ না পাওয়ায় ফ্ল্যাটের স্বত্ত্বাধিকারীরা পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে তাকে মৃত দেখেন।’
তুরাগ থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসমাউল হুসনা জানান, দুপুর ১টার দিকে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তার ঘরের দরজা ভেতর থেকে লাগানো ছিল। পুলিশ দরজা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করেছে। ওসি মো. মেহেদি হাসানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সেখানে কাজ করছে। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে প্রাথমিক কোনো তথ্য জানাতে পারেননি তিনি।
তারেক শামসুর রেহমান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার ও রাজনীতি বিভাগে শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক সদস্য তারেক শামসুর রেহমান শিক্ষক ও কলামিস্ট ছিলেন।
বাংলাদেশ, দক্ষিণ এশিয়া ও বৈশ্বিক রাজনীতি নিয়ে তার অনেক গ্রন্থ রয়েছে। বই লেখার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে কলাম লিখতেন। দেশের অন্যতম সেরা রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে তার খ্যাতি ছিল। বছর দুই আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরে যান এই শিক্ষক। তিনি উত্তরায় নিজ ফ্ল্যাটে একাই বসবাস করতেন। তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রির অধিকারী ড. রেহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। তুলনামূলক রাজনীতি তার আরেকটি গবেষণার বিষয়।
তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ইরাক যুদ্ধ পরবর্তী আন্তর্জাতিক রাজনীতি, গণতন্ত্রের শত্রু-মিত্র, নয়া বিশ্বব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি, বিশ্ব রাজনীতির চালচিত্র, উপআঞ্চলিক জোট, ট্রানজিট ইস্যু ও গ্যাস রফতানি প্রসঙ্গ, বাংলাদেশঃ রাষ্ট্র ও রাজনীতি, বাংলাদেশঃ রাজনীতির ২৫ বছর, বাংলাদেশঃ রাজনীতির চার দশক, গঙ্গার পানি চুক্তিঃ প্রেক্ষিত ও সম্ভাবনা, সোভিয়েত-বালাদেশ সম্পর্ক, বিশ্ব রাজনীতির ১০০ বছর ইত্যাদি।