হঠাৎ করেই দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশীদ এবং দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সুনীল শুভ রায়কে। তবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের ক্ষমতাবলে দেওয়া এ অব্যাহতিতে আশ্চর্য হননি কাজী ফিরোজ রশিদ।
কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, আমি মোটেও আশ্চর্য হইনি। আপনাদের থেকে আমি বিষয়টি জেনেছি। বিষয়টি ঠিক আছে। তিনি (জিএম কাদের) ভালো করেছেন। তবে এ মুহূর্তে আমি কিছুই বলবো না। অনুসন্ধান করলে সব বের হবে।
হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত পার্টির চেয়ারম্যানের ক্ষমতার অপপ্রয়োগ কিনা জানতে চাইলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় পার্টির যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তাদের অব্যাহতির কথা জানানো হয়।
জাপার দুই নেতাকে অব্যাহতির ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি দলীয় গঠনতন্ত্রে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কাজী ফিরোজ রশিদ ও সুনীল শুভরায়কে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও প্রেসিডিয়াম সদস্য পদসহ দলীয় সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছেন। যা ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে।
জাপার দুই নেতাকে অব্যাহতি প্রসঙ্গে পার্টির যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম বলেন, তারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। দলীয় কার্যালয় ঘেরাও করে চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করেছে। এসব কারণে তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গেলো নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে অভিযোগ তুলে জাতীয় পার্টির (জাপা) পরাজিত প্রার্থীরা বুধবার দলের চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। ভোটে ভরাডুবির জন্য দলীয় চেয়ারম্যান জি এম কাদের, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে দায়ী করে এই তিন শীর্ষ নেতার পদত্যাগ দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা। জাপার কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, লিয়াকত হোসেন খোকাসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন।
এক সাক্ষাৎকারে দলটির আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন জাপার কেন্দ্রীয় কয়েক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। সাক্ষাৎকারে মিলন বলেন, জিএম কাদেরসহ বেশ কয়েকজন নেতা দলটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এক পরিবার থেকেই জি এম কাদের নিজে, তার স্ত্রী-ভাগ্নেসহ অনেক আত্মীয়-স্বজন এবং কিছু চামচা এই সমঝোতার সংসদ সদস্য হতে চেয়েছেন। আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীসহ অনেকের বিষয় তো আপনারা জানেন। এরা মিলেই তো দলকে শেষ করে দিয়েছে। এরা তো পার্টির চাঁদার টাকাও মেরে খায়। এ নির্বাচনে পার্টির নমিনেশন বিক্রি হয়েছে সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা। অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী পার্টিতে টাকা দেয়, সেই টাকাও তারা মেরে খায়। এরা তো জাতির সাথেই বেঈমানি করেছে।