সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কাকরাইলে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ও দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
গত ১৫ বছরে সরকারি-বেসরকারি দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, দুদক ছিল, উচ্চ আদালত ছিল কিন্তু বিচার হয়নি। কিন্তু বিচার হয়েছে খালেদা জিয়ার। বিচার না হওয়ায় দুর্নীতি সমাজে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। একজন প্রধানমন্ত্রীর পিয়ন কীভাবে ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়, আবার সংবাদ সম্মেলনে হাসতে হাসতে তা বলেন? তার পুরো পরিবার ছিল চোর। শেখ হাসিনার সময়ে দুদক তার দাসে পরিণত হয়েছিল। বিচার বিভাগও দাসে পরিণত হয়েছিল।
তিনি বলেন, যেসব কাজ বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সাহায্যে করা সম্ভব সেগুলো আমরা করে ফেলব। আমরা দেরি করব না, আমাদের খুব বেশি সময় নেই। বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন কোনো প্রতিবেদন দেয়নি। আমি তাদের বললাম উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য আমরা একটা আইন করব, আপনারা আইন করে দিতে পারবেন কি না? পরে ওই কমিশনের রিপোর্ট ছাড়াই আমাদের আইন করে দিয়েছে।
নতুন কমিশন নিয়োগ প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, দুদকের ব্যাপারটা আমি দেখছি না। যারা দেখছেন বা যিনি দেখছেন তারা এ বিষয়ে সচেতন আছেন। দুদককে অচল রাখা যাবে না। এত বড় বড় দুর্নীতি হয়েছে, দুদককে অবশ্যই সচল করতে হবে।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, সৎ প্রজন্ম তৈরি করতে পারলে দুর্নীতিবিরোধী সমাজ গঠন করা সহজ হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেবল প্রতিকারমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা নয়, সবার মনে দুর্নীতিবিরোধী চেতনা জাগ্রত করতে হবে।
এর আগে সকালে পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসের কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। এর পরপরই সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুদকের মহাপরিচালক ও পরিচালকসহ সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। পাশাপাশি আলোচনা সভা ও চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
জাতিসংঘ ২০০৩ সালে ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ঘোষণা করে। ইউনাইটেড ন্যাশনস কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট করাপশনে (আনকাক) সই করা দেশ হিসেবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৯১টি দেশে একযোগে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে।
এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য– ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা : গড়বে আগামীর শুদ্ধতা’। ২২তম আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসটি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ৮টি বিভাগ, ৬৪টি জেলা এবং ৪৯৫টি উপজেলায়ে উদযাপন করা হচ্ছে।