জলবায়ু পরিবর্তন এবং চলমান বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রভাব মোকাবিলায় আরও তহবিল সরবরাহ করতে বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় সুনির্দিষ্টভাবে পাঁচটি প্রস্তাব রাখেন তিনি। এর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে বাংলাদেশে গৃহীত ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্ল্যান’-এর অনুকরণে কার্যকর কৌশল গ্রহণেরও আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যায় ‘প্রথম জলবায়ু ঝুকিপূর্ণ দেশগুলোর (সিভিএফ) অর্থ সম্মেলন’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। গণভবন থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন তিনি, যিনি একইসঙ্গে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) সভাপতিও।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং কোভিড -১৯ মহামারি মোকাবিলায় প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং অতিরিক্ত তহবিলের ব্যবস্থা করা উচিত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং উন্নত দেশগুলোকে এ বিষয়ে তাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব এবং নৈতিক ও আইনি বাধ্যবাধকতাগুলো পালন করা উচিত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিভিএফ-ভি টুয়েন্টি গ্রুপের ৪৮ সদস্য রাষ্ট্রের মাধ্যমে বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের মাত্র ৫ শতাংশ নির্গত হয়। কিন্তু তারাই এই মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
করোনা মহামারি পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। কোভিড-১৯ মানুষের জীবনকে সংকটের মুখে ফেলে দিয়েছে। চলমান ও ভবিষ্যতের সংকট মোকাবিলায় আমাদের অবশ্যই ঐক্য গড়ে তুলতে হবে এবং সহযোগিতা বাড়াতে হবে।
এসমসয় প্রধানমন্ত্রী পাঁচ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। প্রথম প্রস্তাবে বলেন, বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নিচে রাখতে গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমণ রোধে প্রতিটি দেশকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য অনুসরণ করতে হবে।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী উন্নত দেশগুলোকে সিভিএফ-ভি ২০ দেশগুলোর সবুজায়নের সুবিধার্থে, মূলধনের ব্যয় কমাতে এবং বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান। তৃতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তহবিলের প্রবাহ অবশ্যই অনুমানযোগ্য, ভারসাম্যপূর্ণ, উদ্ভাবনী ও বর্ধনশীল হতে হবে।
চতুর্থ প্রস্তাবে শেখ হাসিনা জলবায়ুর ক্ষতির মোকাবেলায় উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর বিদ্যমান অর্থনৈতিক বৈষম্য কমানোর আহ্বান জানান। পঞ্চম ও শেষ প্রস্তাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্ল্যান’-এর আদলে ‘ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্ল্যান’ গ্রহণ করতে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সিভিএফ সভাপতি দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এই ভার্চুয়াল সম্মেলনে ছিল স্বাগতিক। এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এতে সিভিএফ দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীসহ অন্য প্রতিনিধিরা যোগ দিয়েছিলেন।