নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের মনাটিয়া জমি লিখে না দেওয়ায় আব্দুর রাজ্জাক নামে এক বৃদ্ধকে পায়ে লোহার শিকল পরিয়ে প্রায় দেড় মাস গৃহবন্দী করে রাখার অভিযোগ উঠেছে সন্তানদের বিরুদ্ধে। শনিবার (২১ মে) বিকেলে এ ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীদের সহযোগিতায় কেন্দুয়া থানা পুলিশ ওই গ্রাম থেকে বৃদ্ধকে উদ্ধার করে। তবে এ ঘটনায় বৃদ্ধের স্ত্রী হামিদা আক্তার ও বড় ছেলে সেলিমকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বসতবাড়িসহ এক একরের মতো জমি ছিল আব্দুর রাজ্জাকের। দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী হামিদা আক্তার ও তার তিন ছেলে মিলে ওই জমি তাদের নামে লিখে দেওয়ার জন্য বৃদ্ধ রাজ্জাককে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। তবে তিনি তাদের চাপে জমিজমা লিখে দিতে রাজি হননি। এ অবস্থায় গত ৫ এপ্রিল বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাকের পায়ে লোহার শিকল পরিয়ে বসতঘরের এক কোণায় চৌকির সঙ্গে বন্দী করে রাখেন সন্তানেরা।
বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্ত্রী ও সন্তানদের জমি লিখে না দেওয়ায় তারা আমার ওপর নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন শুরু করে। একপর্যায়ে গত ৫ এপ্রিল থেকে আমাকে শিকল দিয়ে ঘরের কোণে বেঁধে রাখে। স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী ও কল্যাণী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কল্যাণী হাসান বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে আমরা বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাককে শিকলবন্দি করে রাখার সংবাদ পাই। পরে শনিবার (২১ মে) বিকেলে ওই গ্রামে গেলে বসতঘরের এক কোণে পায়ে লোহার শিকল দিয়ে চৌকির সঙ্গে তাকে বেঁধে রাখতে দেখি।
পরে তাকে শিকলমুক্ত করা হয়। মানবাধিকারকর্মী শাহ আলী তৌফিক রিপন বলেন, বিষয়টি জানার পর ওই বৃদ্ধের বাড়িতে যাই। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতে তাকে শিকল-মুক্ত করা হয়। কেন্দুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী হোসেন জানান, এ খরব পেয়ে বৃদ্ধকে উদ্ধার ও দুজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।