জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাসান আল রাজী চয়ন ও ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের মারজান মারিয়া নতুন প্রজাতির ব্যাঙ আবিষ্কার করেছেন । এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসান আল রাজী চয়ন ও মারজান মারিয়া।
জানা যায়, গত বছর জুনে সিলেটের মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে গবেষণার কাজের জন্য গেলে তারা সেখানে এ ব্যাঙটিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পারেন যে, এটা আমাদের পরিচিত ব্যাঙয়ের থেকে কিছুটা আলাদা প্রকৃতির। তারপর তারা এটা নিয়ে বিস্তর গবেষণা করে বুঝতে পারেন যে, এটা পুরো বিশ্বের জন্য একদম নতুন প্রজাতির ব্যাঙ।
নতুন প্রজাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এ ব্যাঙের শারীরিক পরিমাপ, এদের মলিকুলার বিশ্লেষণের পাশাপাশি ডাকের বিশ্লেষণও করেছেন, যা অন্যান্য ব্যাঙদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এরপর তারা তাদের গবেষণাপত্রটি জার্নাল অফ ন্যাচারাল হিস্ট্রি-তে পাঠালে সেখান থেকে এটা প্রকাশ হয় এবং তাদের এ আবিষ্কার এখন বিশ্বের কাছে স্বীকৃতি পেয়েছে। এ কাজের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও সহযোগিতায় ছিলেন লোমনোসভ মস্কো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের রাশিয়ান প্রফেসর নিক পোয়ারকভ। তারা ব্যাঙটির নামকরণ করেছেন প্রাপ্তিস্থান সিলেটের নাম অনুযায়ী “Leptobrachium sylheticum।”
এ বিষয়ে হাসান আল রাজী চয়ন বলেন, নতুন প্রজাতির এই ব্যাঙটি আমাদের দ্বিতীয় আবিষ্কার। নতুন কিছু আবিষ্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করাটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দদায়ক। ইতোমধ্যে আমাদের আরো একটা ব্যাঙ নিয়ে গবেষণা চলছে। যেটা খুব দ্রুতই ঘোষণা হবে। ব্যাঙটি মূলত লাউয়াছড়া বন থেকে পাওয়া। এর আগেও আমরা ওই বন থেকে আরো একটি ব্যাঙ আবিষ্কার করেছি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বনটি হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে, বিভিন্ন কারণে বনের প্রাণ পানির ছড়াগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। বনের ছড়াগুলো ব্যাঙদের আবাসস্থল, তাই আমাদের ছড়াগুলো রক্ষার্থে এগিয়ে আসতে হবে।
এ বিষয়ে মারজান মারিয়া বলেন, নতুন প্রজাতির এই ব্যাঙ আবিষ্কার করে আমরা অনেক খুশি। নতুন এই ব্যাঙটা আবিষ্কার আমাদের জন্য একটা অনুপ্রেরণা। নতুন কিছু আবিষ্কার করে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে পেরে আমরা গর্বিত। ভবিষ্যতে এমন আরও কাজ করতে চাই। উল্লেখ্য, এর আগে তারা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ” raorchestes rezakhani ” নামে পুরো বিশ্বের জন্য নতুন প্রজাতির ব্যাঙ আবিষ্কার করেছিলেন।