জনবিচ্ছিন্ন হয়ে বিএনপি এখন সস্তা ইস্যু তৈরি করতে ভারতীয় পণ্য এবং ভারতের বিরোধিতা করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা একটি কঠিন লড়াইয়ে রয়েছি, আমাদের এখন খুব সহজ সময় যাচ্ছে না। আবার এই বিএনপি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. মঈন খানেরা যখন জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বেকায়দায় পড়েছেন তখনই সস্তা ইস্যু তৈরি করে ভারত বিরোধিতা করে ভারতীয় পণ্য বর্জনের কথা বলেছেন। এই ভারত পণ্য বর্জন, ভারত বিরোধিতা হলো ওদের রাজনৈতিক হালে পানি পাওয়ার জন্য অপচেষ্টা মাত্র। কিন্তু তারা জানে না, জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়া ভারত ইস্যুকে ঘিরে যে ‘ভারত জুজুর রাজনীতি’ করেছিল সেই বাংলাদেশ আজকে আর নেই।
শনিবার (২৩ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য হাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে খুনিদের অবাধ বিচরণ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। যাদের আমরা মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত করেছিলাম, সেই ঘাতকদের অবাধ চারণভূমিতে পরিণত করেছিল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এরশাদরা। আজকের দিনে বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আবার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। জামায়াত-শিবির কিন্তু বসে নেই, ছাত্রলীগকে মনে রাখতে হবে ওরা নিঃশেষ হয়ে যায়নি।
স্বাধীনতার ঘোষক প্রসঙ্গে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, যারা বলেন, হুইসেল দিয়েছেন আর স্বাধীনতা এসে গেছে। যারা ৫২, ৫৪ দেখেনি; যেই জিয়াউর রহমান ৫২, ৫৪, ৫৬, ৫৮, ৬৬, ৬৯ এবং ৭০ এর নির্বাচন দেখেনি, সেই জিয়াউর রহমান হঠাৎ করে এসে চট্টগ্রামের কালুরঘাটের বেতার কেন্দ্রে এসে স্বাধীনতার ঘোষণা করে ঘোষক হয়ে গেলেন। যদি জিয়াউর রহমান ঘোষক হয়, আমিও বরিশালে মাইকিং করেছিলাম বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণা; তাহলে তো আমিও ঘোষক।
এর আগে তিনি বলেন, মুজিব শব্দের অর্থ উত্তরদাতা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে উত্তর দিয়েছেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি এক ধরনের মানসিকতা নিয়ে গড়ে উঠেছেন যে আমাকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে, মানুষকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে এবং মানুষকে নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। ১৯৪০ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগ দেন, ৪৬ সালে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজের (মাওলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৪৯ সালে তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার যুগ্ম সম্পাদক পদে নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় রাজনীতির মূল ধারায় যুক্ত হন, ১৯৫৩ সালে দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে ইস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ সর্ব প্রথম সদস্য নির্বাচিত হন।
এসময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তানভীর হাসান সৈকত বক্তব্য রাখেন। এছাড়া এতে আলোচনায় অংশ নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ঢাবির মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।