ঢাকার নিম্ন আদালত থেকে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি জেএমবির দুই সদস্য পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের খেলার অংশ কিনা এমন প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন,রবিবারের ঘটনা নাটক কিনা আমরা জানি না। তবে আওয়ামী লীগের লোকের মুখে নাটকের কথা শুনেছি। আদালত পাড়ায় যে ঘটনাটা এটা নাটক কিনা তা জনগণের মনে প্রশ্ন জেগেছে। একজন জঙ্গি যার হাতে হাত কড়া,পায়ে বেড়ি পরা সে মোটরসাইকেলে চড়ে পালিয়ে গেল এগুলো মানুষ বিভিন্নভাবে দেখছে।
এটাও তো ওবায়দুল কাদেরের খেলার অংশ হতে পারে। ১০ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বাড়িতে চিরুনী অভিযান হবে কিনা? নির্যাতন হবে কিনা? এই ঘটনা নাটক বা তামাসা কিনা এটা কিন্তু তাদের ঊর্ধ্বতন নেতাকর্মীদের বক্তব্যে প্রমাণিত হচ্ছে। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরবঙ্গ ছাত্র ফোরাম এর উদ্যোগে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সম্প্রতি পুলিশের সাবেক আইজি শহীদুল সাহেব তার পেশাসহ জীবনের নানা ঘটনা নিয়ে একটি বই লিখেছেন। সেখানে একটি জায়গায় তিনি বলেছেন, শ্যামলীতে আমাদের সঙ্গে জঙ্গিদের যুদ্ধ হলো, জঙ্গি দমন করার পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলাম, প্রধানমন্ত্রী বললেন, এতো তাড়াতাড়ি নাটক শেষ করার কী দরকার ছিল। সুতরাং রোববার ঢাকা জেলা আদালতের ঘটনাকে সরকারের লোকজনই তো বলছে- এটা তামাশা। এটা ওবায়দুল কাদেরদের খেলার অংশ। এ খেলা যে কত বিপজ্জনক, কত ভয়ঙ্কর ও কত নিষ্ঠুরতার পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। রিজভী বলেন, একটি লাশের কাঁফন পরাতে না পড়াতেই আরেকটি লাশ হচ্ছে। একটি কবর খনন সম্পূর্ণ হতে না হতেই আরেকটি কবর খনন করতে হচ্ছে। এরকম একটি দুঃসময়ে তারেক রহমানের ৫৮ তম জন্মদিন। এই দিনটি জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করা যাবে না এই নির্দেশনা তারেক রহমান লন্ডন থেকে জানিয়েছে। এটাই তো একজন দেশ নেতার দৃষ্টিসীমা।
রিজভী বলেন,এক ভয়ংকর দুঃসময়ের মধ্যে আছে বাংলাদেশের মানুষ।যারা জননন্দিত, দেশের মানুষের জন্য কাজ করেন কথা বলেন তারা কারাগারে। আর গুন্ডা-পান্ডারা বাহিরে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের কারণে গোটা রাস্ট্রের মানুষ ভয়ে আছে। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এমন যে,একটি লাশ দাফন করতে না করতে আরেকটি লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। দেশের জনপ্রিয় ও ভালো মানুষগুলো কারাগারে আর বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থীকে যারা হত্যা করে, এরা বাইরে দাপট খাটাচ্ছে। পুরো সমাজ ও রাস্ট্র আজ শঙ্কার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেন খেলা হবে। এটি রাজনীতির কোনো ভাষা হতে পারে না। এটি জাতীয় পর্যায়ের কোনো নেতার কথাও হতে পারে না। এটি পাড়ার গুণ্ডা-পাণ্ডার কথা। একটি দলের সাধারণ সম্পাদক এক গভীর জায়গা থেকে এ কথা বলছেন। এর আলামত নানা দিক থেকে নানাভাবে ফুটে উঠছে। এ খেলা মরণ খেলা,এ খেলা ভয়ংকর চক্রান্তের খেলা। সে খেলার কথাই ওবায়দুল কাদের সাহেবরা বলছেন।