স্বপ্ন ছিলো বড় চিকিৎসক হবেন, মুমূর্ষু মাহদী আকিবের সেই স্বপ্ন এখন পেন্ডুলামের মতো দুলছে আইসিইউতে। ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে গুরুতর আহত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের এই শিক্ষার্থী অনেকটা জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। আঘাতে যার মাথা ভেঙে চুরমার; ব্যান্ডেজের উপর লেখা ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’!
মেধাবী এই শিক্ষার্থীর করুণ দশা যেনো ক্যাম্পাস ভিত্তিক সহিংস রাজনীতির জ্বলন্ত প্রতীক। ধবধবে সাদা ব্যান্ডেজের ওপর লেখা, ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’। নিচে এঁকে দেয়া হয়েছে একটি বিপজ্জনক চিহ্নও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহদী আকিবের এই ছবিটি কাঁদাচ্ছে প্রতিটি মানুষকে।
ছাত্রলীগের একপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত টগবগে এই তরুণ, গেলো দু’দিন ধরে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে আছেন, জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। চিকিৎসকরা জানান, হামলায় থেঁতলে গিয়েছিল আকিবের মাথা, ভেঙ্গে গেছে পেছনের অংশের হাড়। চমেকের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রিজওয়ান রেহান বলেন, আকিবকে আরও ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। রাখার পর আশা করি সব ঠিক থাকলে বলতে পারবো তিনি বিপদ থেকে মুক্ত হয়েছেন।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, মেডিকেল কলেজের সামনের সড়কে ধাওয়া দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে ৮ থেকে ১০ জন। আকিবের সহপাঠীরা জানান, কাচের বোতল দিয়ে একের পর এক আঘাত করা হয় আকিবকে। আকিবের সহপাঠী রভ দেব নাথ বলেন, যার জীবন দেয়ার কথা সে জীবন নিতে হায়েনার মতো লেগে থাকে। এখন বলতে হবে তাদের মেডিকেলে পড়ার যোগ্যতা নেই, ডাক্তার হওয়ারও যোগ্যতা নেই।
মানুষ বাঁচানোর ব্রত নিয়ে ছেলেকে আকিবকে চিকিৎসক হতে পাঠিয়েছেন বাবা গোলাম ফারুক মজুমদার। ছেলে এমন দুঃসংবাদে কুমিল্লা থেকে ছুটে এসেছেন তিনি ও তার স্বজনরাও। সেই ছেলের জীবন বাঁচাতে এখন তারা তাকিয়ে আছেন সৃষ্টিকর্তারা দিকে। আকিবের চাচা কামাল মজুমদার বলেন, আমরা তো আসলে এখানে পাঠিয়েছি একটা ছেলে ডাক্তার হয়ে এখান থেকে বের হবে। এরকম হবে আমরা বা কেনো অভিভাবকেরই এটা কাম্য না। শুক্রবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারি জের ধরে শনিবার আকিবের ওপর এই হামলা চালায় একটি অংশ।