গেল বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে টানা ৪ ঘণ্টার বৃষ্টিতে ঢাকার বেশ কিছু এলাকা ডুবে যায়। জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে নিউমার্কেট। মার্কেটটির কোথাও হাঁটু সমান কোথাও আবার কোমর সমান পানি জমা হয়। দোকানিরা বুঝে ওঠার আগেই পানি ছড়িয়ে পড়ে প্রায় প্রতিটি দোকানে। এ নিয়ে দোকানিরা বলছেন- মালামাল ভিজে ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। দোকানপ্রতি তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট হয়েছে। ফলে চোখে অন্ধকার দেখছেন তারা।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নিউমার্কেট ঘুরে দেখা যায়- দোকানিরা ভিজে যাওয়া মালামাল বের করছেন। পণ্যর ওপরের কাভার খুলে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করছেন। প্রায় প্রতিটি দোকানের সামনের অংশে তৈরি হয়েছে ভেজা, আধভেজা পণ্যর পসড়া। মার্কেটে ক্রেতাদের হাঁটার অংশে নষ্ট হয়ে যাওয়া মালামালের স্তূপ।
নিউমার্কের স্টেশনারি অংশ ঘুরে দেখা যায়- প্রতিটি বইয়ের দোকানে পানি প্রবেশ করেছে। পানিতে ভিজে গেছে শত শত বই। ভিজে যাওয়া এসব বই তারা আলাদা করছেন। কেউ বা স্তূপ সাজিয়েছেন দোকানের সামনে।
কিছুটা সমানে ব্যাগের দোকানগুলোতে দেখা যায়- ত্রিপলের নিচে শত শত ব্যাগ। যার প্রায় সবগুলোই ভেজা, আধভেজা। শহীদ মিনার অংশ ঘুরে দেখা যায়- দোকানিরা ভেজা কাপড় আলাদা করছেন। ভেজা কার্পেটের স্তূপ পড়ে রয়েছে দোকানের সামনে। আরও এগুতেই দেখা যায় ইলেকট্রিক দোকানগুলোতে পানি প্রবেশ করেছে। বিভিন্ন মালামাল পানিতে ভিজে যাওয়ায় সেগুলো তারা আলাদা করছেন।
নিউমার্কেট স্টেশনারি অংশের দোকানি মনির বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে কিছু বুঝে ওঠার আগেই দোকান পর্যন্ত পানি চলে আসে। যতগুলো মালামাল পেরেছি ওপরে তুলেছি। রাতে পানি আরও বেড়ে যাওয়ায় চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকার মালামাল, বই পানিতে ভিজে গেছে।
ব্যাগ দোকানি মারুফ বলেন, ব্যাগের দোকানে তো এমনিতেই হিজিবিজি অবস্থা থাকে। নিচে-উপরে সবখানেই মালামাল রাখতে হয়। পানি প্রবেশ করছে দেখেও সরানোর সময় পাইনি। অন্য কোথাও যে রাখব তারও তো উপায় নেই। বাহিরেও ছিল বৃষ্টি।
মোল্লা ইলেকট্রনিক্সের সাইফ বলেন, গত দুই দিন পানিতে যে থই থই অবস্থা, এসে দেখারও সুযোগ ছিল না। দুই দিন পর দোকান খুলে দেখি ময়লা পানিতে মালামাল ভিজে একাকার অবস্থা। এ ক্ষতি কতদিন টানতে হবে জানি না।
নিউমার্কেটের দোকানি মিজানুর রহমান বলেন, মার্কেট থেকে সড়ক উঁচু। বৃষ্টি হলেই পানি ঢুকে পড়ে। রাস্তা দিয়ে যখন গাড়ি যায় পানি ঢেউ খেলে। অন্যদিকে মার্কেটের ড্রেনেজ ব্যবস্থা গত কয়েক বছর থেকে অকেজো হয়ে গেছে। মার্কেটের বৃষ্টির পানিও নামে না।