কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় চুরির অপবাদ সইতে না পেরে নাহিদ (২০) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে পৌরসভার পাইকলক্ষীয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় রাতেই নাহিদের বড় ভাই দ্বীন ইসলাম বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও দুইজনকে আসামি করে পাকুন্দিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের গান্দারচর এলাকার মৃত আব্দুল হাইয়ের ছেলে বাবুল মিয়া (৪৫) ও তার ছেলে নাঈম (২৫) এবং একই এলাকার খোকন মিয়ার ছেলে ইয়াসিনকে (২৫)।
নিহত মো. নাহিদ পাকুন্দিয়া পৌরসভার পাইকলক্ষীয়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবদুল কুদ্দুসের ছেলে।
নাহিদের বড় ভাই নাঈম জানান, তার ভাই নাহিদ ঠিকাদার বাবুলের সঙ্গে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। চলতি মাসের সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে মির্জাপুর এলাকা থেকে ছাদ ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহৃত কিছু মালামাল চুরি হয়ে যায়। ওই রাতেই বাবুলের আরও দুই কর্মচারী রাজু ও হাসান পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় বাবুলসহ অন্যান্য আসামিরা বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে পাকুন্দিয়া বাজারে তার নিজস্ব গ্যারেজে ডেকে নেন নাহিদ ও আজিমকে। সেখানে তাদের আটকে রেখে মারধর করে। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে তিনি সেখানে গিয়ে দেখেন তার ভাইয়ের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধরের চিহ্ন।
এ সময় ঠিকাদার বাবুল এবং পাকুন্দিয়া বাজারের গরুরহাটা এলাকার মেহেদী তাকে জানান, তার ভাইকে এখান থেকে নিতে হলে স্ট্যাম্পে সই করে নিতে হবে। সেখানে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয় পাঁচদিনের মধ্যে তিন লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। ভাইয়ের অবস্থা দেখে এ শর্তেই রাজি হন তিনি। পরে এখান থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ভাইকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন তিনি। পরে অপমান সহ্য করতে না পেরে বাড়িতে গিয়ে কীটনাশক জাতীয় বিষ খায় নাহিদ। পরে তাকে প্রথমে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওযা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানও তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠালে পথেই মৃত্যু হয় নাহিদের।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সারোয়ার জাহান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।