আবারও চীন সফরে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার। সেখানে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) রাজধানী বেইজিংয়ে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। এর একদিন আগেই তিনি চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং শীর্ষ পররাষ্ট্র কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী সিসিটিভি বলেছে, ‘প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০ জুলাই দিয়াওয়ুতাই স্টেট গেস্টহাউসে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের সাথে দেখা করেছেন।’
এসময় গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক উন্মোচনে ১০০ বছর বয়সী সাবেক এই শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিকের ভূমিকার প্রশংসা করা হয়।
এএফপি বলছে, কমিউনিস্ট চীনের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে গোপনে বেইজিংয়ে সফর করেছিলেন তৎকালীন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার। আর সেই সফরটি প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের যুগান্তকারী সফরের মঞ্চ তৈরি করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন এই প্রেসিডেন্ট স্নায়ু যুদ্ধে একটা ঝাঁকুনি দিতে এবং ভিয়েতনামে আমেরিকার যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চেয়েছিলেন।
মূলত তৎকালীন বিশ্ব ব্যবস্থায় বিচ্ছিন্ন থাকা বেইজিংয়ের প্রতি ওয়াশিংটনের সেই পদক্ষেপ উৎপাদন শক্তি হিসেবে চীনের উত্থানে অবদান রেখেছিল এবং এতেই যুক্তরাষ্ট্রের পরে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয় চীন।
এছাড়া দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কিসিঞ্জার চীনে ব্যবসায়িক পরামর্শ প্রদান করে ধনী হয়েছেন। সিসিটিভি বুধবার বলেছে, ‘সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ১৯৭১ সাল থেকে ১০০ বারেরও বেশি চীন সফর করেছেন।’
চীনের এই মিডিয়া আরও বলেছে, ‘চলতি বছরের ২৭ মে কিংবদন্তি এই মার্কিন কূটনীতিক তার ১০০তম জন্মদিন উদযাপন করেছেন। এবং ১০০ বছর হওয়ার পর সর্বশেষ এই সফরটি চীনে তার প্রথম সফরও বটে।’
এর আগে শততম জন্মদিনে সাবেক মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল চীন। সেসময় কিসিঞ্জারের সঙ্গে দেখা করে চীনের পক্ষ থেকে এই শুভেচ্ছা জানান ওয়াশিংটনে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত।
উল্লেখ্য, হেনরি কিসিঞ্জারের অনানুষ্ঠানিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বিরোধ নিরসন এবং একইসঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছিল। আর এরপর থেকেই চীনের নেতাদের সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক রয়েছে তার।
গত বছরের সেপ্টেম্বরেও নিউইয়র্কে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ১৯২৩ সালে জার্মানির একটি ইহুদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করা কিসিঞ্জার।