চীনা কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাসের একটি চলমান নতুন তরঙ্গের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এটি প্রতিরোধে ভ্যাকসিন তৈরির জন্য তাড়াহুড়ো শুরু করেছে দেশটি। এটি জুনে তীব্র আকার নেবে এবং সপ্তাহে সাড়ে ছয় কোটি লোক আক্রান্ত হবে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।
করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট এক্সবিবি শক্তিশালী হয়ে ওঠায় নতুন ভ্যাকসিন তৈরিতে তাড়াহুড়া করছে চীন সরকার। গত বছর চীন তার ‘জিরো কোভিড’ নীতি থেকে হঠাৎ সরে আসে। এরপর চীন করোনার বড় ঢেউয়ের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
চীনের মহামারি বিশেষজ্ঞ জং নানশান সোমবার বলেছেন, এক্সবিবি ওমিক্রন সাবভ্যারিয়েন্টের (এক্সবিবি.১.৯.১, এক্সবিবি.১.৫ ও এক্সবিবি.১.১৬ সহ) জন্য দুইটি নতুন টিকা প্রাথমিক পর্যায়ে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। গুয়াংঝৌতে এক বায়োটেক বিষয়ক সিম্পোজিয়াতে বক্তব্যকালে তিনি বলেন, আরও তিন থেকে চারটি টিকা শিগগিরই অনুমোদন দেয়া হবে। তবে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত তথ্য দেননি।
চীনের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এখনকার প্রাদুর্ভাবে ভয়াবহতা কম হবে। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের বিপুল বয়স্ক মানুষের মৃত্যুহার কমাতে চাইলে জোরালো টিকাদান কর্মসূচির পাশাপাশি হাসপাতালগুলোকেও প্রস্তুত থাকতে হবে।
বেইজিং সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের মতে, নতুন ভেরিয়েন্টে সংক্রমণের হার গত মাস থেকে বেশি। এপ্রিলের শেষ দুই সপ্তাহে প্রচলিত সংক্রামক রোগ হিসেবে ফ্লুকে ছাড়িয়ে গেছে করোনা।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আগের শীতের সময়ের তুলনায় এবার লক্ষণ হবে হালকা। ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ অত বাড়বে না। এ অবস্থায় কিছু স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠান অধিবাসীদের মুখে মাস্ক পরতে অনুরোধ করেছে। ব্যস্ত এলাকা এড়িয়ে চলতে অনুরোধ করেছে।
গত শীতে চীন তার কঠোর জিরো-কোভিড নীতি পরিত্যাগ করার পর নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বড় তরঙ্গ হতে পারে। যদিও চীনের সরকারী সূত্র দাবি করছে, সাম্প্রতিক উত্থান সেই অর্থে মারাত্মক হবে না।
২০১৯ সালে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের পর এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এর ভ্যাকসিন তৈরির জন্য বিজ্ঞানীদের তাড়াহুড়ো করতে হয়েছিল। প্রায় তিন বছর পর পৃথিবী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। তবে বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে পরবর্তী মহামারী নিয়ে উদ্বিগ্ন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের সাম্প্রতিক একটি সতর্কবার্তা উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি সতর্কতা দিয়ে জানান, পুরো বিশ্বকে পরবর্তী মহামারির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। যা করোনার চেয়েও ভয়ংকর হতে পারে।