যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মুখোমুখি সাক্ষাতে বসার প্রস্তাব চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ফিরিয়ে দিয়েছেন মর্মে যে রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছেন বাইডেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। গত সপ্তাহে এই দুই নেতার মধ্যে দেড় ঘন্টা ফোনে কথা হয়। এ নিয়ে একাধিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, বাইডেনের প্রস্তাব গ্রহণ করেননি প্রেসিডেন্ট শি। পক্ষান্তরে বেইজিংয়ের প্রতি সুর নরম করেছে ওয়াশিংটন। এ রিপোর্টের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা বাইডেনের কাছে জানতে চান, প্রেসিডেন্ট শি তার সাক্ষাতের আহবান গ্রহণ করেননি, এতে তিনি হতাশ কিনা। জবাবে জো বাইডেন বলেন, এ খবর সত্য নয়। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রকাশিত রিপোর্টটিতে যথার্থতা তুলে ধরা হয়নি।
কিন্তু ওই ফোনালাপ সম্পর্কে ব্রিফ করা হয়েছে এমন একটি সূত্র বলেছেন, প্রস্তাব পাওয়ার পরই প্রেসিডেন্ট শি আন্তরিকভাবে বলেছেন, এ জন্য প্রথমে সুর নরম করা উচিত এবং সম্পর্কের পরিবেশকে উন্নত করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসও তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসও সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে একই রকম রিপোর্ট করেছে। তাতে বলা হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে উপযুক্ত সাড়া পাননি বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মুখোমুখি আলোচনায় বসার ধারনায় যুক্ত হতে রাজি হননি। কারণ হোয়াইট হাউজ মনে করে করোনা ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগও এক্ষেত্রে কিছুটা দায়ী। আগামী মাসে ইতালিতে বসছে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন। সেই সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার মুখোমুখি আলোচনা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু গত বছর করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে চীনের বাইরে যাননি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তাই সেখানে তাদের মুখোমুখি দেখা হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
দুই নেতার ফোনালাপের বিষয়ে জ্যাক সুলিভান বিবৃতিতে বলেছেন, দুই নেতার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রাইভেট আলোচনা হয়েছে। আমরা তার প্রতি সম্মান দেখাই। উল্লেখ্য, গত সাত মাসের মধ্যে বাইডেন ও শি জিনপিংয়ের মধ্যে এটাই ছিল প্রথম ফোনকল বা আলোচনা। কয়েক দশক ধরেই চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কটা ভাল যাচ্ছে না। তাই নতুন করে যদি শীর্ষ পর্যায়ে যোগাযোগের মাধ্যমে সেই সম্পর্ক একটি সন্তোষজনক পর্যায়ে আসে, তাহলে উভয় দেশের জন্যই তা মঙ্গল। হোয়াইট হাউজ ওই ফোনকলের পরে বলেছে, তারা যোগাযোগের চ্যানেল উন্মুক্ত রাখতে চায়। তবে আবার কবে আলোচনা হবে সে পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট শি বলেছেন যে, সম্পর্কের ক্ষেত্রে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পলিসি। তবে উভয় পক্ষই ঘন ঘন যোগাযোগে সম্মত হয়েছে।