বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীনের সঙ্গে অন্যান্য দেশের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে মার্কিন মুদ্রা ডলারের চেয়ে প্রভাবশালী হয়ে উঠছে তাদের নিজস্ব মুদ্রা ইউয়ান। চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিদেশী মুদ্রা বিভাগ স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব ফরেন এক্সচেঞ্জের বরাতে জানা গেছে এ তথ্য।
বুধবার একটি বিবৃতি দিয়েছে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব ফরেন এক্সচেঞ্জ। সেটির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ২০২৩ সারের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেশী ও মিত্রস্থানীয় বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে ৪৩ হাজার ৪৫০ কোটি ইউয়ান লেনদেন করেছে চীন। তার এক মাস পর, মার্চ মাসে এই লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৫৪ হাজার ৯০৯ কোটি ইউয়ান।
এই সময়সীমার মধ্যে ডলারে কী পরিমাণ লেনদেন করেছে চীন— তা উল্লেখ করা হয়নি রয়টার্সের প্রতিবেদনে; তবে বলা হয়েছে— চলতি বছরের মার্চ মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যত লেনদেন করেছে চীন, শতকরা হিসেবে তার ৫৩ দশমিক ৩ শতাংশই সম্পন্ন হয়েছে ইউয়ানে; আর ডলারে হয়েছে ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ।
২০১০ সাল পর্যন্ত চীনের আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ইউয়ানের ব্যবহার ছিল প্রায় শুন্যের কোঠায়। তবে তার পর থেকেই বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নিজেদের মুদ্রার ব্যবহার বাড়িয়েছে চীন। ইউয়ানকে একটি প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক কারেন্সি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যেই এর ব্যবহার বাড়ানো শুরু হয়েছিল।
২০২২ সালে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এক্ষেত্রে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে ইউয়ানের জন্য। কারণ যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ রাশিয়ার ওপর একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করার এক পর্যায়ে নিজেদের জ্বালানি পণ্য ডলারের পরিবর্তে রুবলে বিক্রি করবে বলে জানিয়ে দেয় মস্কো।একই সময়ে নিজেদের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক লেনদেনের ভিত্তি হিসেবে ডলারের পরিবর্তে রুবল ও ইউয়ান ব্যবহার সম্পর্কিত চীনের প্রস্তাবও মেনে নেয় রাশিয়া।
ইউয়ানের শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকার ক্ষেত্রে এটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। কারণ চীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার রাশিয়া।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অবশ্য এখনও ডলারের চেয়ে ইউয়ান বেশ দুর্বল, কিন্তু চলতি বছরের শুরু থেকে যত দিন যাচ্ছে— ততই শক্তিশালী হয়ে উঠছে ইউয়ান।