চিরদিন ক্ষমতায় থাকতে সরকার প্রশাসন, গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী সরকার আমাদের গ্রাস করে ফেলেছে। তারা গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের গণতান্ত্রিক ন্যূনতম অধিকারও কেড়ে নিয়েছে। তারা জোর করে অবৈধ এবং অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় বসে আছে।’
সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেকশোরে বিএনপি আয়োজিত এক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ফখরুল। ‘বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ও দুঃশাসনের দেড় দশক’শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকার আবারও জোর করে চিরদিন ক্ষমতায় থাকতে সংবিধান সংশোধন করেছে। পুলিশ, প্রশাসন, গণমাধ্যম সবই নিয়ন্ত্রণ করছে। দেশের পুরো সমাজকে তারা নষ্ট সমাজে পরিণত করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই। করপোরেট গণমাধ্যম তৈরি করা হয়েছে। বড় বড় কোম্পানিগুলো সবাই টিভি চ্যানেল বা পত্রিকার মালিক। তারা সবাই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কেউ কিন্তু টাকা পাচারের বিরুদ্ধে কথা বলে না। আসলে গণতন্ত্র ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম সম্ভব নয়।
সরকারকে হটাতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে সরকার কারাবন্দি করে রেখেছে। ৬ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করেছে। সহস্রাধিক নেতাকর্মী খুন করেছে। চল্লিশ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে লক্ষাধিক মিথ্যা মামলা দিয়েছে। সুতরাং এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে হলে সব শ্রেণি পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আজ শুধু দেশের মানুষ নয়, বিদেশিরাও বলছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। তারা সবাই আপনাদের সঙ্গে আছে। অতীতে যেভাবে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিলাম; আবারও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে চলে যেতে বাধ্য করতে হবে।’
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক আমলা ইসমাইল জবিউল্লাহ। আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ।