হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদিরের টাকার অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না। বিনা চিকিৎসায় কয়েক বছর ধরে ধুঁকে ধুঁকে মরছেন।
জীবন বাজি রেখে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির জীবন যুদ্ধে এখন পরাজিত সৈনিক। সারাদিন গ্রামে নিজে নিজে কথা বলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। যে হাতে অস্ত্র তুলে জীবন বাজি রেখে মাতৃভূমি স্বাধীন করেছেন আজ অর্থাভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না।
গত কয়েক বছর ধরে নিজের সহায় সম্বল বিক্রি করে তার চিকিৎসা করাতে গিয়ে পরিবার আজ নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। তার দুই ছেলে কৃষিজমিতে কাজ করে এতদিন কোনো রকম চিকিৎসা করিয়েছেন। এখন আর তাদের পক্ষে চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাকে উন্নত চিকিৎসা করানো হলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।
আব্দুল কাদিরের ছেলে রোকন উদ্দিন জানান, তার বাবা কয়েক বছর আগে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন। তাদের সীমিত সম্পদ বিক্রি করে তাকে সুস্থ করে তুলতে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছেন। চিকিৎসা জানিয়েছেন, তার চিকিৎসা ব্যয়বহুল। তাকে সুস্থ করতে হলে হাসপাতালে রেখে একটানা চিকিৎসা করাতে হবে। কিন্তু আমাদের পক্ষে ব্যয়বহুল চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয়। এখন আমরা দুই ভাই মানুষের কৃষি জমিতে কাজ করে কোনো রকমে টিকে আছি। বাবার চিকিৎসা করাতে গিয়ে শেষ সম্ভব ভিটেবাড়ি বিক্রি করে ফেলেছি।
মাধবপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক মধু জানান, সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খুবই আন্তরিক। মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর বাড়িসহ অনেক সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন। কিন্তু কমলপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদিরের বর্তমান অবস্থা খুবই করুণ। দেশের একজন সূর্যসন্তান আজ অর্থাভাবে তার ভালো চিকিৎসা হচ্ছে না। দেশের যে কোনো সরকারি হাসপাতালে তাকে ভালো চিকিৎসা দিলে আব্দুল কাদির সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। তাই সরকারের প্রতি আমাদের দাবি আব্দুল কাদিরকে যেন ভালো চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়।
মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইশতিয়াক আল মামুন জানান, প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার অনেক সুবিধা রয়েছে। তার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে মনে হচ্ছে তাকে ভালো চিকিৎসা ও পুষ্টিকর খাবার দিলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।