ঢাকা ও শ্রীমঙ্গল দফায় দফায় বৈঠকের পর এক সফল সমঝোতা বৈঠক শেষে চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে টানা ১০দিনের মাথায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ। প্রধানমন্ত্রীর উপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে সাবেক মজুরি ১২০ টাকাতেই কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন শ্রমিকরা। তবে মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
সোমবার (২২ আগস্ট ) সকালে দেখা গেছে শ্রীমঙ্গল উপজেলার ইস্পাহানি কোম্পানি মালিকানাধীন জেরিন চা বাগানে কাজে যোগ দিয়েছেন চা শ্রমিকরা। ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ডাকা ধর্মঘটের ১০ দিন পেরিয়ে ১১তম দিনে শ্রমিকরা কাজে ফেরায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে চা বাগানগুলো।
রবিবার (২১ আগস্ট) মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে এক সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাত ৯ থেকে শুরু হওয়া বৈঠক শেষ হয় রাত ৩টায়। টানা ৫ ঘণ্টার বৈঠকে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন, জেলা পুলিশ সুপার মো. জাকারিয়া, শ্রম অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক নাহিদুল ইসলাম, শ্রীমঙ্গলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন, শ্রীমঙ্গল থানার ওসি মো. শামীর অর রশিদ তালুকদার সহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাগণ।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান দেখিয়ে সোমবার থেকে বাগানের কাজ চলবে।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একটি সফল বৈঠক হয়েছে। নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান জানিয়ে সোমবার থেকে কাজে যোগদান করবেন ১২০ টাকা মজুরিতেই।
মীর নাহিদ জানান, তারা মজুরি বৃদ্ধির বিষয় ও অন্যান্য দাবি দাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে নির্ধারণ করতে চান। আমরা তাদের প্রতিটি বিষয় এবং দাবি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এর আগে শনিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও শ্রম অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপে চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বিষয়টি আপাতত মেনে আন্দোলন প্রত্যাহার করলেও সেই সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে সাধারণ শ্রমিকেরা।