ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে ৩৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ ভোট পড়েছে। দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ভোট নিয়ে কমিশন সন্তুষ্ট। কারণ এবারের উপজেলা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। বড় ধরনের কোনো সহিংসতা নেই।
বুধবার (৫ জুন) সকাল ৮টা থেকে দেশের ৬০ উপজেলার ৫ হাজার ১৪৪টি ভোটকেন্দ্রে চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ হয়। এরমধ্যে ছয়টিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এবং বাকিগুলোতে ব্যালটে ভোট হয়। ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এরপর ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়।
চতুর্থ ধাপে চেয়ারম্যান হলেন যারা
ফেনী
ছাগলনাইয়া: জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মিজানুর রহমান মজুমদার কাপ-পিরিচ প্রতীকে ৫৪ হাজার ৯২১ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন।
বরগুনা
আমতলী: উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার ফোরকান আনারস প্রতীকে ৩৭ হাজার ১৮৮ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
তালতলী: উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান মিন্টু আনারস প্রতীক নিয়ে ২০ হাজার ৩৯৬ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
সিলেট
কানাইঘাট: জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ পলাশ মোটরসাইকেল প্রতীকে ৩৫ হাজার ৩০২ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
জকিগঞ্জ: উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লোকমান উদ্দিন চৌধুরী দোয়াত-কলম প্রতীকে ২৪ হাজার ৬৩ ভোট পেয়ে পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
হবিগঞ্জ
মাধবপুর: উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ মো. শাহজাহান ঘোড়া প্রতীকে ৬২ হাজার ২৫৬ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
চুনারুঘাট: উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ লিয়াকত হাসান ঘোড়া প্রতীকে ৫২ হাজার ৮২৯ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
রংপুর
বদরগঞ্জ: জেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফজলে রাব্বী সুইট কাপ-পিরিচ প্রতীকে ৬১ হাজার ৫৯৬ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
তারাগঞ্জ: উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আনিচুর রহমান দোয়াত-কলম প্রতীকে ৪১ হাজার ৭৩৫ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ
কামারখন্দ: উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মতিন চৌধুরী আনারস প্রতীকে ১৭ হাজার ২৮৬ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
রায়গঞ্জ: উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম হোসেন শোভন সরকার ঘোড়া প্রতীকে ৭০ হাজার ৮৪২ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
যশোর
সদর: যুবলীগ কর্মী তৌহিদ চাকলাদার ফন্টু মোটরসাইকেল প্রতীকে ৫৭ হাজার ৯১৪ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
জামালপুর
সরিষাবাড়ী: উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম আনারস প্রতীকে ৪২ হাজার ২১৩ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
বরিশাল
বাবুগঞ্জ: বরিশাল জেলা মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোসা. ফারজানা বিনতে ওহাব আনারস প্রতীকে ২৮ হাজার ৫১৪ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান হয়েছেন।
বানারীপাড়া: উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক দোয়াত-কলম প্রতীকে ৩৩ হাজার ৭৬২ ভোট পেয়ে চতুর্থবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
উজিরপুর: উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান ইকবাল কাপ-পিরিচ প্রতীকে ৩১ হাজার ৩৫৫ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
ময়মনসিংহ
ভালুকা: জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হাজী রফিকুল ইসলাম রফিক আনারস প্রতীক নিয়ে ৪৮ হাজার ৬৯৪ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন।
গফরগাঁও: উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশরাফ উদ্দিন বাদল আনারস প্রতীক নিয়ে ৭১ হাজার ৩০৪ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন।
নান্দাইল: উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম শাহান দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে ৪৬ হাজার ৪৩৬ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন।
চট্টগ্রাম
বাঁশখালী: চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম ৬১ হাজার ৫১১ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন।
লোহাগাড়া: উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী আনারস প্রতীকে ৩০ হাজার ৮৯৯ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
ফরিদপুর
বোয়ালমারী: উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া দোয়াত-কলম প্রতীকে ৪৩ হাজার ২৩৬ ভোট পেয়ে চতুর্থবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
আলফাডাঙ্গা: ব্যবসায়ী কাজী মনিরুল হক মোটরসাইকেল প্রতীকে ১৩ হাজার ৫৯৩ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন।
দিনাজপুর
ফুলবাড়ী: উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান মিল্টন ৫৭ হাজার ৬৬২ ভোট পেয়ে পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
পার্বতীপুর: উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান প্রামাণিক ৭১ হাজার ১৬৭ ভোট পেয়ে পুনরায় চেয়ারম্যান হয়েছেন।
নবাবগঞ্জ: উপজেলার ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজওয়ার মোহাম্মদ ফাহিম ৪৯ হাজার ৯৩১ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
কুমিল্লা
হোমনা: কুমিল্লা উত্তর জেলা মহিলা লীগের সদস্য রেহানা বেগম আনারস প্রতীকে ৪০ হাজার ২৭৭ ভোট পেয়ে পুনরায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
নাঙ্গলকোট: উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বাছির ভূঁইয়া দোয়াত-কলম প্রতীকে ৪৭ হাজার ৯৫ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
চৌদ্দগ্রাম: উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রহমত উল্লাহ বাবুল আনারস প্রতীকে ১ লাখ ২৪ হাজার ৮৯৪ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
চাঁদপুর
কচুয়া: পৌর যুবলীগের সভাপতি মো. মাহবুব আলম টেলিফোন প্রতীকে ৩৪ হাজার ৪৩০ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
ফরিদগঞ্জ: উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি খাজে আহমেদ মজুমদার চিংড়ি প্রতীকে ৬২ হাজার ৪৯৬ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ
বাজিতপুর: রেজাউল হক কাজল আনারস প্রতীকে ৩৬ হাজার ২১২ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান হয়েছেন।
ভৈরব: আবুল মনসুর কাপ-পিরিচ প্রতীকে ৪০ হাজার ৩৫০ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন।
কুলিয়ারচর: একক প্রার্থী হিসেবে আবুল হোসেন লিটন আগেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন।
বগুড়া
নন্দীগ্রাম: উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা মোটরসাইকেল প্রতীকে ৪১ হাজার ৩৭৯ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন।
ধুনট: উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আসিফ ইকবাল আনারস প্রতীকে ৪০ হাজার ৬০ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
টাঙ্গাইল
মির্জাপুর: আওয়ামী লীগ নেতা ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত আনারস প্রতীকে ৫৫ হাজার ৬৪৪ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
সখীপুর: মুহাম্মদ আবু সাঈদ মিয়া আনারস প্রতীকে ৩৭ হাজার ৭৯১ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান হয়েছেন।
বাসাইল: কাজী অলিদ ইসলাম আনারস প্রতীকে ২৮ হাজার ৮৫৪ ভোট পেয়ে তৃতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
গোপালপুর: কে এম গিয়াস উদ্দিন দোয়াত-কলম প্রতীকে ৩৩ হাজার ৫১ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
রাজশাহী
চারঘাট: চারঘাট উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মোটরসাইকেল প্রতীকের কাজী মাহমুদুল হাসান। তিনি পেয়েছেন ৩২ হাজার ২৮১ ভোট।
বাঘা: বাঘা উপজেলায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মোটরসাইকেল প্রতীকের লায়েব উদ্দিন লাভলু। তিনি পেয়েছেন ৩২ হাজার ৪০৫ ভোট।
খুলনা
দাকোপ: দাকোপ উপজেলায় আবুল হোসেন ৩৬ হাজার ৩২৯ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
বটিয়াঘাটা: বটিয়াঘাটা উপজেলায় মো. মোতাহার হোসেন ৩৩ হাজার ৭৮৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
রূপসা: রূপসা উপজেলায় নির্বাচিত হয়েছেন এস এম হাবিবুর রহমান। তিনি পেয়েছেন ২৫ হাজার ৭৭৭ ভোট।
নেত্রকোনা
কেন্দুয়া: উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোফাজ্জল হোসেন ভূইয়া ঘোরা প্রতীক নিয়ে ৩৭ হাজার ৭০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
সুনামগঞ্জ
শান্তিগঞ্জ: শান্তিগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন সাদাত মান্নান অভি। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে ৪০ হাজার ৯৮৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ
ভৈরব: উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কাপ-পিরিচ প্রতীকে মো. আবুল মনসুর বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৪৮ হাজার ২০০ ভোট।
দেশের ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫ উপজেলায় চার ধাপে ভোট হয়েছে এবার। প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোট হয়েছে গত ৮ মে। এসব উপজেলায় গড়ে প্রায় ৩৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৮ জন নির্বাচিত হন।
দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬টি উপজেলা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন ২২ জন। ২১ মে এই ধাপের নির্বাচনে ভোট পড়ে ৩৮ শতাংশ। তৃতীয় ধাপে মোট ১ হাজার ১৫২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২৯ মে এই ধাপের নির্বাচনে ৩৫ শতাংশ ভোট পড়ে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে তৃতীয় ধাপে ২২টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এরমধ্যে দুটির নির্বাচন বুধবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাকি ২০ উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৯ জুন।