চট্টগ্রামে নগর জুড়ে গ্যাস-সংকট বিরাজ করেছে। পাইপলাইনে চাপ কমে যাওয়ায় রান্নার চুলা জ্বলছে মিটমিট করে আর শিল্প কারখানা অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। গতকাল সোমবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত গ্রাহকদের গ্যাস নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। গ্যাস বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এমনিতে গ্যাস-সংকট চলছে। তার মধ্যে তিনটি বৃহৎ গ্যাস ব্যবহারকারী শিল্প কারখানা এক সঙ্গে চালু করায় সরবরাহ লাইনে চাপ কমে যায়। পাইপলাইনে চাপ বাড়াতে হলে একটি সার কারখানা বন্ধ অথবা সরবরাহ বাড়াতে হবে।
চট্টগ্রামে সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল চট্টগ্রামে ২৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তার মধ্যে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, কাফকো ও সিইউএফএল সার কারখানায় ১২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে। এই তিনটি বড় গ্যাস ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠান চালু থাকায় পাইপলাইনে চাপ কমে গেছে। চট্টগ্রামে পাইপলাইনে চাপ বাড়াতে হলে সার কারখানা দুইটির মধ্যে একটি বন্ধ রাখতে হবে না হয় সরবরাহ বাড়াতে হবে। কিন্তু সরকার সার কারখানা চালু রাখতে চায়। সামনে বোরো মৌসুম আসছে। ইউরিয়া সারের চাহিদা বাড়বে। নগরীতে শিল্প কারখানায় উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। সিইপিজেড, কর্ণফুলি শিল্পাঞ্চল, নাসিরাবাদ, কালুরঘাট, সীতাকুন্ড শিল্পাঞ্চলে বিভিন্ন ভারী শিল্প কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। সরবরাহ লাইনে চাপ কম থাকায় কারখানার মেশিন চলছে না।
মূলত এলএনজি সরবরাহ কমে যাওয়ায় অক্টোবরের শুরু থেকে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ কমতে থাকে। চট্টগ্রামে এলএনজি সরবরাহ দেওয়া হয়। বর্তমানে ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে। তার মধ্যে চট্টগ্রামে সরবরাহের পর বাকি এলএনজি ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গ্যাস কোম্পানির কর্মকর্তারা জানান, দৈনিক ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ পাওয়া গেলে মোটামুটি চট্টগ্রামে চাহিদা পূরণ করা যায়।
গ্যাস-সংকটের কারণে সিএনজি ফিলিং স্টেশন দৈনিক পাঁচ/ছয় ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে। চট্টগ্রামে প্রায় ৭০টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন রয়েছে। গতকাল সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো গাড়ির দীর্ঘ সারি। চাপ কম থাকায় গাড়িতে গ্যাস নিতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। অনেকেই দীর্ঘক্ষণ লাইনে থেকে গ্যাস নিতে পারেনি।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রায় ৭ হাজার বন্দি রয়েছে। এদের জন্য দুই বেলার খাবার রান্না করতে হয়। কিন্তু অনেক দিন যাবৎ কারাগারে গ্যাস-সংকট বিরাজ করছে। কারাগার সূত্র জানায়, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ২টা পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। এতোগুলো মানুষের খাবার লাকড়ি দিয়ে রান্না করতে হচ্ছে।