জালিয়াতি করে সাবেক মন্ত্রীর ছেলের নামে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়া এবং স্থানান্তরের অভিযোগে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) বর্তমান ও সাবেক দুই শীর্ষ কর্মকর্তাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে দুদক।
বৃহস্পতিবার নগরীর আগ্রাবাদ এলাকা থেকে মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং ও সার্ভিসেস) মো. সরোয়ার হোসেন ও সাবেক ব্যবস্থাপক মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। নগরীর আকবর শাহ এলাকায় বাসায় অভিযান চালিয়ে মো. দিদারুল আলম নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি কেজিডিসিএল’র বিক্রয় বিভাগের দক্ষিণ জোনে টেকনিশিয়ান পদে কর্মরত আছেন।
দুদকের আইনজীবী কাজী সানোয়ার হোসেন লাভলু বলেন, তাদের তিনজনকে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হলে হাকিম আশফাকুর রহমান কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। দুদক কর্মকর্তারা জানান, অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ স্থানান্তর ও নতুন সংযোগ দেওয়ার একটি অভিযোগের সত্যতা পেয়ে কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন নিয়ে বুধবার একটি মামলা করেন উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন।
গ্রেপ্তার তিনজন ছাড়াও কেজিডিসিএল এর সাবেক মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মোহাম্মদ আলী চৌধুরী এবং সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মুজিবুর রহমানকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মামলা এজাহারে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ প্রসঙ্গে দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, নগরীর হালিশহর এলাকার বাসিন্দা এম এ সালাম নামে এক গ্রাহকের (বতমানে মৃত) নামে বরাদ্দকৃত ১৮টি অব্যবহৃত দ্বৈত চুলার সংযোগ ছিল। এর থেকে ৬টি দ্বৈত চুলা রেখে বাকি ১২টি দ্বৈত চুলা নগরীর চান্দগাঁও সানোয়ারা আবাসিক এলাকার গ্রাহক মুজিবুর রহমানের নামে স্থানান্তর করা হয়। মৃত সালামের স্ত্রী নুরজাহান সালামের নামে ভুয়া চুক্তিনামা সৃজন করে সেগুলো স্থানান্তর করা হয়। মৃত সালাম এবং মুজিবুর রহমানের গ্রাহক সংকেত আলাদা। এ অবস্থায় সংযোগ স্থানান্তরের কোনো আইনগত বৈধতা নেই।
এছাড়া ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ থাকলেও এই সিদ্ধান্ত অমান্য করে আরও ১০টি সংযোগ দেওয়া হয় মুজিবুর রহমানের নামে সানোয়ারা আবাসিক এলাকায়। ২০১৭ সালের ২ মার্চ থেকে পরের বছরের ২ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এসব সংযোগ দেওয়া হয় মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এ হিসেবে ভুয়া আবেদনপত্র সৃজনের মাধ্যমে গ্রাহক মুজিবুর রহমানের নামে মোট ২২টি অবৈধ সংযোগ দেওয়া হয়।
এর আগে, বুধবার (৯ জুন) দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১ এর উপ-সহকারি পরিচালক শরীফ উদ্দিন বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ স্থানান্তর ও নতুন সংযোগ দেয়ার অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পাবার পর দুদকের প্রধান কার্যালয় মামলা দায়েরের অনুমোদন দেয়। মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ৪২০, ১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আসা হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মুজিবুর রহমানকে ফোন করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।