চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫ শ্রমিক নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ১০টার পর বেতনভাতা নিয়ে অসন্তোষ থেকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত বেশ কয়েকজনকে বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতরা হলেন- শুভ (২৩), মো. রাহাত (২৪), আহমদ রেজা (১৯), রনি হোসেন (২২) ও রায়হান (২০)।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় আবদুল কাদের, ইয়াসির আহমেদ, আসাদুজ্জান নামে তিন পুলিশ কনস্টেবলও আহত হয়েছেন। কনস্টেবল আবদুল কাদের ঢাকা পোস্টকে বলেন, ’সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় গ্রামবাসী ও শ্রমিকসহ ১০ হাজারের মতো মানুষ আমাদের ঘিরে ফেলে। এসময় দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে তারা আমাদের ওপর হামলা করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে।’
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, প্রথমে এসআলম বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পরে উস্কানি দিয়ে আশেপাশের গ্রামবাসীকে এতে সম্পৃক্ত করা হয়। পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
চমেক হাসপাতালে পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, আহত অবস্থায় রায়হানকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন দুপরে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
চমেক পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শীলব্রত বড়ুয়া বলেন, চমেক হাসপাতালে এখন পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ১৩ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন, শাকিল (১৯), আমিনুল ইসলাম (২৫), দিদার (২১), বিল্লাল (২৬), আযাদ (১৮), মিজান (১৮), কামরুল ইসলাম (২৬), শিমুল (২৮), শহিদুল ইসলাম (২৩), ও হাবিবুল্লাহ (২০)।
আহত শহিদুল ও শাকিল নামে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুজন শ্রমিক বলেন, সকালে আমরা বেতন বাড়ানোর জন্য এবং নামাজ ও ইফতারের সময়ে বিরতির দেওয়ার দাবি জানাই। কিন্তু আমাদের দাবি মেনে না নিয়ে মালিকপক্ষের লোকজন ও কারখানার চীনা শ্রমিকরা মিলে হামলা করে। পরে পুলিশ এসে যোগ দেয় এতে।
বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত বলেন, সকালে বিদ্যুৎকেন্দ্রে বেতনভাতা নিয়ে শ্রমিকরা ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেতে গেলে সংঘর্ষ বেধে যায়। এর জেরে মোট ৫ জন নিহত হয়েছে।