দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ভরা পূর্ণিমা ও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বিধ্বস্ত । সেন্টমার্টিনের একমাত্র জেটির পন্টুন, দ্বীপের বাঁধ ও সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েকটি ঘরবাড়ি এবং উপড়ে গেছে শতাধিক গাছপালা। এতে আতঙ্ক ভর করেছে দ্বীপের ১০ হাজার বাসিন্দার মাঝে। মঙ্গলবার (২৫ মে) সকাল থেকে এই দ্বীপে হানা দেয় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি। রাতেও একইভাবে জোয়ারের ধাক্কায় ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে দ্বীপের কয়েক পাশ। সঙ্গে রয়েছে ঝড়োবৃষ্টির হানাও। বুধবার (২৬ মে) সকালের জোয়ারেও পানির তীব্রতা মোকাবিলা করছে দ্বীপবাসী।
দ্বীপের বাসিন্দা মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আতঙ্কে দ্বীপের মানুষ নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে থেমে থেমে ঝড়ো বৃষ্টি হতে থাকে। জোয়ারের পানিতে দ্বীপের উত্তর ও পশ্চিম তীরের গাছপালা উপড়ে গেছে। ভাঙছে রাস্তাঘাট। তাই আমার মতো দ্বীপের সব বাসিন্দাই ভয়ে আছেন।’ সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, ‘দ্বীপের লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার মতো এখনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। যদি সংকেত বাড়ে, তখন মাইকিং করে লোকজন নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।’
চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দ্বীপের উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকের অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে বেশ কিছু গাছপালা উপড়ে গেছে। রাস্তাঘাট ভাঙছে। আর প্রবল জোয়ারের ধাক্কায় বালিয়াড়িতে থাকা পাঁচটি ট্রলার ভেঙে গেছে। জোয়ারের পানির তোড়ে জেটির পন্টুনটি বিধ্বস্ত হয়েছে। নানা অংশ ভেঙে পড়েছে।’
কোস্টগার্ড সেন্টমার্টিন স্টেশনের ইনচার্জ লে. কমান্ডার রাসেল মিয়া বলেন, ‘দ্বীপে সব মিলিয়ে বাসিন্দা রয়েছে ১০ হাজার ২৬ জন। এরইমধ্যে দ্বীপের হোটেল, রিসোর্ট, স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ মিলে ৩০টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। যেখানে ৬ হাজার মানুষকে আশ্রয় দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্রবল জোয়ারের পানিতে জেটির পন্টুন কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর সব ধরনের ট্রলার চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। টেকনাফে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে প্রায় ৫০টি অধিক ট্রলার। আর ছোট ট্রলার, নৌকা ও স্পিডবোটগুলো দ্বীপের উপকূলে নোঙর করে রাখা হয়েছে। আশা করি, সবার সমন্বয়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতি মোকাবিলা সম্ভব হবে।’
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের একটি টিম, রেড-ক্রিসেন্টের লোকজন ও দ্বীপে দায়িত্ব থাকা বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সর্তক অবস্থানে রয়েছে। অবস্থা খারাপ হলে প্রয়োজনে দ্বীপের সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।’