ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত ঠেকাতে শনিবার (৮ মে) সন্ধ্যার পর থেকে দেশের সব ফেরিঘাটে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। শনিবার রাতে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের চাহিদা অনুযায়ী সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সন্ধ্যার পর থেকে ফেরিঘাটে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।’
বিজিবির পরিচালক (অপারেশনস) লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান বলেন, ‘ফেরিঘাটের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি সদস্য অত্র এলাকায় (ফেরিঘাটে) দায়িত্ব পালন করবেন।’ এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (বিআইডব্লিউটিসি) সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দিনের বেলায় ফেরি চলাচল বন্ধ আছে। তবে জরুরি সেবা এবং অ্যাম্বুলেন্স পরিবহনের জন্য আলাদাভাবে ২৪ ঘণ্টা খোলা রয়েছে। এসব ফেরিগুলোতে লোকজন বেপরোয়াভাবে উঠে যায়। এ জন্য বিজিবি মোতায়েন থাকছে।’
করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধের মধ্যেই ঈদকে সামনে রেখে শুক্রবার (৭ মে) থেকে ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বাড়ে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে। শুক্রবার সকালে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপের কারণে শিমুলিয়া থেকে ফেরিতে কোনো যানবাহন উঠতে পারেনি। এদিন সকাল ৮টার দিকে একটি ফেরি (এনায়েতপুরী) কোনো যানবাহন ছাড়াই ১২০০ যাত্রী নিয়ে বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। বেলা সোয়া ১১টার দিকে ফেরিটি শুধুমাত্র যাত্রী নিয়েই শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে এসে পৌঁছায়।
এ অবস্থায় মধ্যরাতে বিআইডব্লিউটিসি থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে শনিবার থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে দিনে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। রাতে শুধু পণ্যবাহী পরিবহন পারাপারের জন্য ফেরি চলবে। তবে শনিবার ভোর থেকে ঘরমুখো মানুষ শিমুলিয়া ঘাটে জড়ো হতে শুরু করেন। যাত্রীদের রোষানলে পড়ে শেষ পর্যন্ত ফেরি চালাতে বাধ্য হয় ঘাট কর্তৃপক্ষ।
শনিবার মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট থেকে ১১ হাজার যাত্রী নিয়ে তিনটি ফেরি মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ঘাট সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ১২টা ৪৩ মিনিটের দিকে প্রায় তিন হাজার যাত্রী ও সাতটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ছেড়ে গেছে ফেরি শাহ পরান। এর আগে ফেরি এনায়েতপুরী শিমুলিয়া ঘাট থেকে প্রায় চার হাজার যাত্রী নিয়ে দুপুর ১২টা ২৩ মিনিটের সময় ছেড়ে যায়। সকাল ৯টা ৫ মিনিটের দিকে ফেরি কুঞ্চলতা প্রায় চার হাজার যাত্রী নিয়ে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।