মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তার রক্তাক্ত ক্র্যাকডাউনের বিরুদ্ধে সামনের দিনগুলোতে ‘গেরিলা’ কায়দায় ধর্মঘট অব্যাহত রাখতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটির গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীরা। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ কথা জানায়। মিয়ানমারে সামরিক জান্তার ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) রাতভর মোমবাতি জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে গণতন্ত্রকামীরা।
শুক্রবার (২ এপ্রিল) থেকে ইন্টারনেট বন্ধে নতুন বিধিনিষেধের মধ্যেই ক্ষমতা দখলকারী জেনারেলদের অপসারণ এবং সামরিক বাহিনীর রক্তাক্ত ক্র্যাকডাউনের বিরুদ্ধে সংগঠিত থাকতে নতুন নতুন উপায় বের করছে বিক্ষোভকারীরা। রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, নতুন বিধিনিষেধ আরোপের পর মিয়ানমারে শুধুমাত্র কয়েকটি নির্দিষ্ট সার্ভিস লাইনে ইন্টারনেট চালু রয়েছে। অভ্যুত্থান বিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠী এখন নিজেদের মধ্যে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ও মোবাইল বার্তার মাধ্যমে সামরিক জান্তার দেওয়া এই ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট পাশ কাটানোর চেষ্টা করছে।
সামরিক নিপীড়নের ছবি সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এবং তরুণদের নেতৃত্বাধীন এই আন্দোলন দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার মধ্যে আগেই মোবাইল ডাটায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। ইন্টারনেটের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে টেলিকম কোম্পানিগুলোর কাছে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি সামরিক জান্তা।
বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) বাস স্টপগুলোতে ‘ফুল ধর্মঘটের’ ডাক দেয় বিক্ষোভকারীরা। সেই বাস স্টপগুলো ছিল বহু বিক্ষোভকারীর জীবনের শেষ যাত্রা। সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অনেকে নিহত হন।
গেরিলা ধর্মঘটের আহ্বান জানিয়ে বিক্ষোভকারীদের নেতা খিন সাদার ফেসবুকে বলেন, ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার আগে এইটুকু আপনাদের জানাতে চাই, আগামী দিনগুলোতে রাজপথে আরও বিক্ষোভ হবে। যত বেশি সম্ভব গেরিলা হামলা করুন। দয়া করে আমাদের সঙ্গে যোগ দিন। চলুন আবার রেডিও শুনি, একজন আরেকজন ফোন করি।
গণতান্ত্রিক নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে সামরিক জেনারেলদের ক্ষমতা দখল এবং অং সাং সুচিকে আটক করার পর থেকে বিক্ষোভে টালমাটাল মিয়ানমার। দেশটির সামরিক জান্তা বিরোধী বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৪৩ জন মানুষ মারা গেছেন বলে জানিয়েছে অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স।