দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে ২০২০ সালের স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হলেও নিয়মিত অফিসে আসেন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেইনম্যান মুজিবর রহমান। অভিযোগ রয়েছে, চাকরি না থাকলেও দুর্নীতি-অনিয়মের মাধ্যমে অর্জিত অর্থের জোরে দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন মুজিবর।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে চাকরি চলে যাওয়ার পরও কেন অফিসে আসছেন নিয়মিত, তার সদুত্তর দিতে পারেননি গৃহায়নের কর্মকর্তারা। সোমবার (২৩ মে) দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সহিদুর রহমান এবং উপসহকারী সোমা হোড়ের সমন্বয়ে একটি টিম জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের অফিসে অভিযান পরিচালনা করে। দুদকের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
দুদক জানায়, মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার পরও নিয়মিত অফিসে বসে নানা ধরনের অনৈতিক এবং দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ড করার অভিযোগ রয়েছে। এর ভিত্তিতে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনের পরিচালককে অভিযোগ সম্পর্কে জানানো হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি অফিস আদেশের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তি অফিসে প্রবেশ করে অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় অফিসের কেউ যেন সহযোগিতা না করে এ বিষয়ে নির্দেশ প্রদান করেছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।
মুজিবরের বরখাস্তের বিষয়ে জানা যায়, তিনি খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) কর্মচারী হওয়া সত্ত্বেও ২০২০ সালের প্রথম দিকে রাজউকে পোস্টিং চেয়ে পূর্ত মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। নথি দেখে মুজিবর সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের টনক নড়ে। সেখানে বিধিবহির্ভূতভাবে সংযুক্তি দেখিয়ে গৃহায়নে চাকরি করছেন। এর ফলে প্রশাসন শাখায় ফাইল আটকে যায়। ফাইলের নোটে মুজিবরকে তার ‘মূল কর্মস্থলে পাঠানো হোক’ বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের ২০ মে মুজিবরকে কেডিএতে পোস্টিং করা হয়। কিন্তু বদলির পরও তিনি কর্মস্থলে যোগ দেননি। একপর্যায়ে তার বেতন ভাতা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। পরে নির্ধারিত সময়ে কর্মস্থলে যোগ না দেওয়ায় তাকে বিধি অনুযায়ী কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু জবাব দেননি মুজিবর। এরপর বিভাগীয় মামলার রায়ে গুরুদণ্ডপ্রাপ্ত হলে মুজিবরকে চাকরি থেকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হয়। ২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর মুজিবরকে চাকরিচ্যুত করে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। বরখাস্তের পর কিছুদিন আড়ালে ছিলেন তিনি। কিছুদিন পর আবারও বেপরোয়া মুজিবর।
চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হলেও মুজিবর রহমান অঢেল সম্পদের মালিক। নিজের ব্যক্তিগত দুটি গাড়ি, রিয়েল স্টেট ব্যবসা, আবার ধানমন্ডিতে বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের মালিকানা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।